ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিগত নির্বাচনে সর্বস্তরের জনগণ আমার প্রতি যে ভালোবাসা ও আন্তরিকতা দেখিয়েছে এতে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নিপীড়ন উপেক্ষা করে ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণের যে ভালোবাসা ও আস্থা পেয়েছি তা ধরে রাখতে চাই। মেয়র হিসেবে চেয়ারে বসা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়, সুযোগ পেলে ঢাকার প্রতিটি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারা আমার কাছে সবচেয়ে বড়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন আয়োজিত অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মন্ত্রী সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অডিটরিয়ামে দোয়া ও স্মরণসভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, ‘আমার বাবা মেয়র থাকা অবস্থায় জীবনে কখনো নগর ভবনে আসিনি। আমরা এখানে আসি, এটি আমার বাবা কখনো প্রশ্রয় দিতেন না। আমি প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য তার জীবন সম্পর্কে জানছি। ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলাম।আপনারা দেখেছেন স্বৈরাচারী খুনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার কিভাবে উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করেছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের নির্বাচনেও ভোট ডাকাতি করেছে তারা। সে নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা একটি মামলা করেছিলাম, সেই মামলা এখনো চলমান রয়েছে। তখন সঠিক বিচার পাওয়ার সুযোগ ছিল না, এটি এখন তৈরি হচ্ছে।তিনি আরো বলেন, ‘মেয়র হিসেবে চেয়ারে বসা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে জনগণ আমাকে যেভাবে গ্রহণ করেছে সেটি। জনগণ যেভাবে আমাকে সাড়া দিয়েছে সেটি আমার রাজনীতির জন্য সবচেয়ে বড় শক্তি। জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা ধরে রাখতে চাই। বিশ্বের বাসযোগ্য শহরগুলোর মধ্যে ঢাকাকে উল্লেখযোগ্য স্থানে নিতে চাই।গত কয় বছরে ঢাকা ওয়াসা সাতটি খাল সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দিয়েছে। এসব খাল নিয়ে কাজ করার নামে অবৈধ সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ৯০০ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে ৩০০ কোটি টাকা খরচ করেছেন। এই টাকা কোনো কাজে আসেনি।’স্মরণসভায় ইশরাক হোসেন আরো বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর নির্ভর করবে ঢাকা শহর বিশ্বের উন্নত শহরগুলোর কাছাকাছি উঠে আসবে কি না। ঢাকা শহর সাধারণ মানুষের জন্য কতখানি বসবাসযোগ্য তা নির্ভর করছে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর। শহরকে আস্থার জায়গায় নিতে হবে। আমার বাবার কাছ থেকে জেনেছি, সিটির বড় সমস্যা ছিল সমন্বয়হীনতা। ঢাকা সিটি সাতটি মন্ত্রণালয়ের ৫০টির অধিক দপ্তর সংশ্লিষ্ট। আর এসব দপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে শহরকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় আনা যায়নি। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যত ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, প্রতিটি ঘটনার বিচার করা হবে। আপনারা যে যে পদের জন্য যোগ্য, সেই পদে আপনাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান ক্ষমতায় গেলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করে সব ধরনের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।’ স্মরণসভা আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
দোয়া ও স্মরণসভায় উদ্বোধক বক্তা ছিলেন অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক ডেপুটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কমিশনার আলহাজ কাজী আবুল বাশার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর মোহাম্মদ ইলিয়াস ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান প্রিন্স।