সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, আজকে আমি বলতে চাই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কথা। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক। বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠাতা। আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। আত্মনির্ভশীল দেশ গঠনে তিনি যে ১৯ দফা দিয়েছিলেন। সেই ১৯ দফার মধ্যদিয়ে আজও বাংলাদেশ চলছে। বাংলাদেশের জনগনের আত্মংকার জাতীয়তাবাদীর পরিচয়। তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তিনি দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দেশে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করে চলছেন আপোষহীন নেত্রী। তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে খুনী হাসিনা। তিনি অসুস্থ, তার চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়া হয় নাই। আজকে তিনি মুক্ত হয়ে লণ্ঠনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার অবস্থা এখনও আশাংকাজনক আপনারা সকলে নেত্রীর রোগমুক্তির জন্য দোয়া করবেন। তিনি যেন সুস্থ হয়ে আপনাদের মাঝে ফিরে আসেন। আজকে আর একটি কথা না বললেই নয়, সেটি হলো আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন তারেক রহমান। তাকে আওয়ামী লীগ সরকার মেরে ফেলার চেষ্ঠা করেছিল। তিনিও চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে। যখন দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে নেয়া হয়, তখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন তারেক রহমান আট হাজার মাইল দূর থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছিল। স্বৈরচার শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছেন। ঐক্যবদ্ধ ছিলেন বলেন আজকে আপনাদের বিজয় হয়েছে। জুলাই-আগাষ্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরচার হাসিনা সরকার দেশ থেকে পলায়ন করেছে। পলায়ন করেছে কোথায়-ভারতে। তাকে কোন দেশ আশ্রায় দেয়নি। ভারত তাকে আশ্রায় দিয়েছে। তার কারণ শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানিয়েছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ছিল নতজানু পররাষ্ট্রনীতি। আজকে আপনারা মুক্ত। স্বাধীনভাবে জনগন কথা বলতে পারছে।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনারা হলেন জিয়ার সৈনিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সর্বভোমত্ব আঘাত হানতে না পারে সেজন্য সজাগ ও সতর্ক থাকবেন। আমরা দীর্ঘ ১৭টি বছর আন্দোলন করেছি। তবে এখনও আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি। এখনও দেশী-বিদেশী চক্র দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার পায়তারা করছে। আজকে আপনাদের মনে রাখতে হবে দেশ গঠনে জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা ছিল সংস্কার। এটি সবার মনে ধারন করতে হবে।
পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা সম্পর্কে জনগনকে বোঝাতে হবে।
অন্তবর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আপনারা সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। ভোটের মধ্যদিয়ে জনগনের শান্তি ফিরে আসবে। ভোটে বিলম্ব হলে দেশে অশান্তি নেমে আসবে। দেশ ছেড়ে পলায়ন করা শত্রুরা বসে নেই। দেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করছে বলেও মনে করেন তিনি।
লালবাগ বিএনপির নেতাকর্মীর উদ্দেশ্য তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচন কঠিন হবে। জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী চলবেন। জনগনের আকাংখা বুঝবেন। জনবিরোধী কোন কাজে লিপ্ত হবেন না। কারন জনগনই আমাদের শক্তি।
মঙ্গলবার রাত সারে ৯ টায় রাজধানীর আজিমপুরস্থ ছাপড়া মসজিদ মাঠে লালবাগ থানা আয়োজিত সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর ৮৯তম জন্মবাষিকী উপলক্ষে ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় গরিব ও দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুব বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মহিলা দলের সাবেক সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ২৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মীর আশরাফ আলী আজম, সাবেক কমিশার আনোয়ার পারভেজ বাদল, ২৬ নং ওয়াড বিএনপির সভাপতি গোলাম সারোয়ার শামীমসহ প্রমূখ।
মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরীক সুস্থতা কামনা করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুব বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ বলেন, আজকে আমরা যে স্থানে অনুষ্ঠান করছি, বিগত ১৭ বছর এ জায়গাটি ছিল আওয়ামী লীগের দখলে। অথচ এটি মসজিদের জায়গা। এটি দখল দিয়ে দোকান বসিয়ে ভাড়া খেযেছে। ছাত্র-জনতার বিল্পবের মূখে ৫ আগাষ্ট ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর এখন দখলমুক্ত। জুলাই-আগাষ্ট বিল্পবে এ অনুষ্ঠানস্থলের ১০০ গজের মধ্যে ৩জন মানুষকে গলি করে হত্যা করে খুনী হাসিনার দোসরা। জুলাই-আগাষ্টে যারা নিহত হয়েছে তাদের মাগফেরত কামনা করেন তিনি। দীর্ঘ ১৭ বছর এই লালবাগসহ বাংলাদেশের প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় ও মহল্লায় মহল্লায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ। আজকে মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছে।
মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ আরও বলেন, ৭২-৭৫ সালে ব্যাংক ডাকাতি থেকে শুরু করে মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে যে দলটি, সেই দলটি আবার ১৭বছর বাংলাদেশের জনগনের উপর কি বিভৎস ষ্টিমরোলার চালিয়েছে। বাসায় বাসায় গিয়ে আওয়ামী যুবলীগ চাঁদা নিয়েছে ও বিভিন্নভাবে অত্যাচার করেছে। চাঁদা না দিলে নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে। হ্যত-গুম, হামলা-মামলাসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল তারা। সেই লুট-পাটকারী দল গত ৫ আগাষ্ট পালিয়ে গিয়ে বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভোমত্ব ও গণতন্ত্র বিপন্ন করার জন্য নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে ধ্বংস করেদিয়েছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর অগনতান্ত্রিক ও বিচারহীনতার কারনে বাংলাদেশের প্রতিটি স্তরে একটি অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। দেশের সব সময় অস্থিরতা বিরাজ করছিল। তার কারণ দেশে কোন নির্বাচন ছিল না, ছিলনা কোন জবাবদিহিতা। যেই দেশে গনতন্ত্র নাই, সেখানে জবাবদিহিতা থাকে না। সেখানে বিড়ালও বাঘ হয়ে যায়। লুট-পাটর রাজত্ব কায়েম হয়। তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করেছে। কারন একটা জাতিকে ধ্বংস করতে হলে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে হবে। তাই আওয়ামীল দেশকে ধ্বংস করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করেছে বিগত ১৭টি বছর।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য মীর নেওয়াজ আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচন ব্যবস্থাকে সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। তার কারন দীর্ঘ ১৭ বছর দেশের মানুষ যে কষ্ট করেছে, এখনও সেই কষ্টেই মানুষ রয়েছে। তার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূরে্যর উর্দ্ধগতি, পনির বিল, গ্যাসের বিল ট্যাক্সসহ সব কিছু বাড়ছ্।ে দেশের মানুষ ভাল নেই। নির্বাচন হলে ভোটের অধিকার পাবে জনগন। আর ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলের জনগনের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে। জনগন তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।