
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ ও সংসদসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি কাঠামোকে আল্লাহ প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী ঢেলে সাজাতে পারলেই ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক একটি সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব। এতে গণমানুষের কল্যাণ ও মুক্তি নিশ্চিত হবে।সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর কুর্মিটোলা আবাসন ক্যাম্পে আয়োজিত এক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।সেলিম উদ্দিন বলেন, কিছু অসৎ ব্যক্তি ও রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী মহলের কারণে দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। তারা লাগামহীন দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ নিজেদের হাতে কুক্ষিগত করেছে। একদিকে দেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপন করছে, অন্যদিকে এই দুর্নীতিবাজ গোষ্ঠী অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপন করছে। তাই এ অপশক্তির হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হলে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে— কেউ বস্তিতে, কেউ খোলা আকাশের নিচে, আর কেউ বিলাসবহুল প্রাসাদে বাস করছে। এ বৈষম্যমূলক সমাজ কাঠামো কাম্য নয়। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নিজেরাই বস্তিতে আগুন লাগায়, আবার নিজেরাই ত্রাণ বিতরণের নামে জনসাধারণের সামনে নিজেদের মানবিক রূপ তুলে ধরে। তারা পরিকল্পিতভাবে বস্তিবাসীকে বাস্তুচ্যুত করে আবার অর্থের বিনিময়ে পুনর্বাসন করে। এ দ্বিচারিতার কারণেই দেশে সুশাসন ও শান্তি ফিরছে না।
জামায়াতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এমন একটি ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে প্রতিটি মানুষের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত হবে। কোনো মানুষ যেন বস্তিতে বসবাস না করে, বরং তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় সম্মানজনক বাসস্থান নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে বড় বড় ইমারত নির্মাণ করে সেগুলো তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ আর অপশাসন, দুঃশাসন ও স্বৈরাচারী-ফ্যাসিবাদী শাসন দেখতে চায় না। স্বাধীনতার পর জনগণ তাদের ভাগ্যোন্নয়নের আশায় যাদের ওপর ভরসা করেছিল, তারা জনগণের পরিবর্তে নিজেদের ভাগ্য বদলেছে। তাই মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। তারা আর পুরনো প্রতীকে ভোট দিয়ে নতুন করে প্রতারিত হতে চায় না। এখন তারা 'দাঁড়িপাল্লা' প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।
সমাবেশে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানান এবং সবাইকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, দুর্নীতি ও ঘুষমুক্ত একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ থেকে ‘দাঁড়িপাল্লা’র বিজয় নিশ্চিত করার জন্য আপসহীনভাবে মাঠে থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কর্নেল (অব.) আব্দুল বাতেন এবং ইসলামী ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাসির উদ্দীন।