
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদী অপশাসন ও দুঃশাসন থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে ছাত্র-জনতার সঙ্গে দেশের শ্রমিক সমাজ রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। তাই ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শ্রমিকদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে।”শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মিরপুর-১০ এর সেনপাড়া পর্বতা ঈদগাহ মাঠে ঢাকা-১৫ আসন জামায়াতের আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ঢাকা-১৫ আসনের সদস্য সচিব ও মিরপুর পূর্ব থানার আমীর শাহ আলম তুহিন।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আগস্ট বিপ্লব এমনিতেই হয়নি; এজন্য অসংখ্য ত্যাগ ও কুরবানির প্রয়োজন হয়েছিল। ছাত্র, তরুণ, যুবক ও শ্রমিক সমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফলেই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে বিদেশে পালাতে বাধ্য হন।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবের এক হাজার শহীদের তালিকা আমাদের হাতে রয়েছে, যার মধ্যে ৬০ শতাংশই শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। বাকি ৪০ শতাংশ অন্য শ্রেণির। এসব শ্রমিকের অধিকাংশই প্রান্তিক পর্যায়ের। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, দেশ ও জাতির প্রতিটি ক্রান্তিকালে শ্রমিক সমাজই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তাই ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় শ্রমিকদের যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
জামায়াত আমীর আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবের আগে দেশে মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, লুটপাট, অপরাধ ও জুলুমে গোটা দেশ অস্থির হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ফ্যাসিবাদের পতনের পর যে আশার সঞ্চার হয়েছিল, অন্তর্বর্তী সরকার তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে এখনো দুর্নীতি ও অনিয়ম রয়ে গেছে, জনগণ শান্তি ও নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত। তাই এই অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “জামায়াত একটি মজলুম সংগঠন। পতিত সরকারের আমলে জামায়াতের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর এমন নিপীড়ন ভারতীয় উপমহাদেশে এর আগে কখনো দেখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি; বরং আজ তারাই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।”
সমাবেশের শেষ পর্যায়ে ডা. শফিকুর রহমান শ্রমিক সমাজকে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থেকে রাজপথে সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।