ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাইযোদ্ধা শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে শেষ বিদায় দিতে খোড়া হচ্ছে কবর।শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল সমাধি চত্বরে কবর খোড়ার কাজ শুরু হয়। হাদির শেষশয্যার স্থানটি দেখতে সকাল থেকেই সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। বেদনার্ত মানুষের অনেকের চোখের ছিল অশ্রু।উপস্থিত জনতা হাদির কবরের দিকে দৃষ্টি রাখছেন। কেউ কেউ চোখের পানি মুছছিলেন, কেউবা বুক বেঁধে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হাদি ভাই সবসময় সবার পাশে দাঁড়াতেন। আজ তার চলে যাওয়ায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আমরা চাই তার স্বপ্ন ও আদর্শ বেঁচে থাকুক।’
ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ শরীফ হায়দার বলেন, ‘আমি আজ এখানে এসেছি শুধু শোক জানাতে। হাদির দেশপ্রেম আমাদের সাহস আর অনুপ্রেরণা দিয়েছে। দেশের জন্য যারা লড়াই করে, তারা কখনো ভুলে যাওয়া উচিত নয়।’বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাব্বি বলেন, ‘আমরা দেশপ্রেমিক এক নেতাকে হারিয়েছি। হাদি ভাইয়ের জন্য চোখের পানি ধরে রাখতে পারছি না। তার উপস্থিতি আমাদের শক্তি দিত। আজ তার জন্য কবরের পাশে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে যেন সময় থেমে গেছে।’এদিকে হাদির দাফন ঘিরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন গেট প্রবেশ সীমিতকরণ করা হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং ‘ইনকিলাব মঞ্চে’র মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে (এসজিএইচ) নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার না ফেরার দেশে চলে যান এই জুলাইযোদ্ধা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তার মরদেহ নেওয়া হয় রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের হিমঘরে। সেখান থেকে আজ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নেওয়া হয় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ নেওয়া হয়েছে জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। সেখানে জানাজার পর মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর নজরুল ইসলামের পাশে দাফন করা হবে ওসমান হাদিকে।