ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪,
সময়: ০৪:৪১:৪৯ AM

বাকেরগঞ্জে চাল বিতরণে অনিয়ম

জেলা প্রতিনিধি।। দৈনিক সমবাংলা
26-11-2024 04:41:49 AM
বাকেরগঞ্জে  চাল বিতরণে অনিয়ম

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ডিলার সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে। গত কাল ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) ও ২৮ এপ্রিল (শুক্রবার) বন্ধের দিনে নিয়মকানুন তোয়াক্কা না করে ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতিতে নিজের ইচ্ছেমতো পরিমাপের সঠিক মত চাল না দিয়ে ক্রেতাদের ৩০ কেজির পরিবর্তে ২৪,২৫,২৬ কেজি করে চাল বিতরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।প্রকৃত দরিদ্ররা এর সুবিধা পাচ্ছে না। দেশের হত দরিদ্র পরিবারের খাদ্য সমস্যার কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রথমে ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি শুরু করে। বর্তমানে সরকারের নির্দেশে ৫ টাকা কেজিতে বৃদ্ধি করে ১৫ টাকা দরে চাল বিক্রয় কার্যক্রম চলছে। এর মাধ্যমে গ্রামের হতদরিদ্ররা অভাবের সময়ে কম দামে চাল ক্রায় করতে পারবে বলে সরকার এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সরকারের এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য মহৎ হলেও সাখাওয়াত হোসেনের মত দুর্নীতিবাজের কারণে তা পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, সাখাওয়াত হোসেন অনিয়মকে যেন নিয়মে পরিণত করেছে। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বছরের পর বছর ধরে গরিবের পেটে লাথি মেরে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ডিলার সাখাওয়াত হোসেন। অথচ যাদের জন্য এ কর্মসূচি, তারাও উপকার পাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।

 

ভুক্তভোগী রিক্সা চালক কামাল হোসেন জানান, ৪৫০ টাকার বিনিময় আমাদের ৩০ কেজি চাল দেয়ার কথা কিন্তুু ডিলার আমাদের চাল দিচ্ছেন বালতি দিয়ে তাতে আমি ২৫ কেজি পেয়েছি।

 

এছাড়াও সুদির শীল, লোকমান হাওলাদার,আসমা বেগম, নরু হাওলাদার সহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন আমাদেরকে চালে কম দেয়া হচ্ছে কেউ পাচ্ছি ২৫ কেজি অনেকে পাচ্ছে ২৬ কেজি।

 

২৮ এপ্রিল সরেজমিনে দেখা যায়, অসহায় দরিদ্ররা সঠিক ভাবে সুবিধা পাচ্ছে না। সুবিধা পাচ্ছে অনেক সচ্ছল ব্যাক্তি ও ডিলার সাখাওয়াত হোসেন এর আত্মীয়স্বজনরা। অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে প্রকৃত দরিদ্ররা এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কালিগঞ্জ বাজারে চাল বিক্রির ডিলার পয়েন্টে গেলে দেখা যায় ডিলার সাখাওয়াত হোসেন চেয়ার টেবিলে বসে গ্রাহকদের থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৪৫০ টাকা চালের দাম বুঝে নিচ্ছেন। অথচ গ্রাহকদের ৩০ কেজি চাল না দিয়ে পরিমাপ ছাড়াই বস্তার মুখ খুলে চাল মেঝেতে রেখে প্লাস্টিকের বালতি দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো ক্রেতাদের ব্যাগে চাল ভরে দিচ্ছেন। ওই চাউলের বস্তা গুলো পাশের মুদি দোকানে নিয়ে পরিমাপ করা হলে কোন কোন অবস্থায় ২৪,২৫,২৬ কেজি দেখা যায়। একদিকে চাল কম অন্য দিকে ৫ কেজির মুল্য হিসেবে নেয়া হচ্ছে ৭৫ টাকা। ৫৩১ জন কার্ডধারী লোক এই ডিলার পয়েন্টে রয়েছেন। ডিলার যেমন চাল চুরি করছে তেমনি প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন গরীব অসহায়দের টাকা। রঙ্গশ্রী ট্যাগ অফিসারের অনুপুস্থিতিতে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এতে কালো বাজারে চাল বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন ডিলার সাখাওয়াত হোসেন।

 

এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসার বাকেরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লাভলী আক্তারকে সাংবাদিকদের জানান ডিলার সাখাওয়াত হোসেনকে আমি বন্ধের দিনে চাল দিতে নিষেধ করেছি। আমি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে খবর পেলে তাকে একাধিক বার ফোন দিয়ে নিষেধ করেছি কিন্তু সে আমার কথা অমান্য করে নিজের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চাল বিতরণ করেছেন। বিষয়টা আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল জানান, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অনিয়মের অভিযোগ পেলে তদন্তে করে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ডিলারশিপ বাদ দেয়া হবে।