ঢাকা, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪,
সময়: ০৩:০৯:৪৮ PM

মহামারির রূপ ধারণ করেছে ডেঙ্গু

স্টাফ রিপোর্টার ।।দৈনিক সমবাংলা
04-12-2024 03:09:48 PM
মহামারির রূপ ধারণ করেছে ডেঙ্গু

সরকার মহামারি ঘোষণা না করলেও সারা দেশে মহামারির রূপ ধারণ করেছে ডেঙ্গু। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। এরই মধ্যে এক বছরে মৃত্যুর সংখ্যায় গড়েছে রেকর্ড। আগে বর্ষায় প্রকোপ বাড়লেও এখন প্রায় ১২ মাসই মিলছে রোগী। এ অবস্থায় আলোচনায় আসছে ডেঙ্গুর টিকা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ট্রায়ালে থাকলেও সব বয়সীদের জন্য কার্যকর কোনো টিকা আবিষ্কার হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি টিকার অনুমোদন দিলেও এতে রয়েছে সীমাবদ্ধতা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও দায়িত্বশীলরা এখনো টিকার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। অন্য দেশের দিকে নজর রাখছেন তারা। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গুর টিকা দেশে ব্যবহার করা যাবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। গণহারে এই টিকা প্রয়োগে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

অনুমোদনপ্রাপ্ত ডেঙ্গু টিকা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত শুধু ডেংভাক্সিয়া টিকা অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া এডিস মশাবাহিত এ রোগ প্রতিরোধে ট্রায়ালে আছে আরও পাঁচটি টিকা। এর মধ্যে তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে রয়েছে জাপানের তাকিদা কোম্পানির কিউডেঙ্গা। এছাড়া ট্রায়ালে আছে ব্রাজিলের ইনস্টিটিউট বুটানটান আর যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের যৌথ উদ্যোগের টিকা বুটানটান-ডিভি। যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর সানোফি এবং লুই পাস্তুর ইনস্টিটিউট মিলে ডেংভাক্সিয়া নামে টিকার অনুমোদন দেয়। তবে তা ব্যবহার করা যাবে শুধু ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে। যার আগে ডেঙ্গু সংক্রমণের ইতিহাস আছে এবং ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকায় বসবাস করলে টিকা নিতে পারবে।

জাপানের তাকিদা ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ‘কিউডেঙ্গা’ টিকা ব্রাজিলে অনুমোদন পেয়েছে। গত ১৪ মার্চ দেশের ২৮ হাজার শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কের ওপর এ টিকা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।বৈশ্বিক গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান এফএমআই সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত ডেংভাক্সিয়া ও কিউডেঙ্গা অন্তত ২০টি দেশে অনুমোদন পেয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, পেরু ও এল সালভাদর উল্লেখযোগ্য।এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু টিকার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন। একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কিছু দেশে ডেঙ্গু টিকা অনুমোদন পেয়েছে। সেই দেশগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে ডব্লিউএইচও যখন অনুমোদন দেয়, তারপর আমরা শুরু করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নানা মহলে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চলছে। এটা যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের দেশের জন্য কার্যকরী হয়, বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিবেচনাধীন থাকবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের যোগাযোগ আছে।সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হলেও এখনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না। ভ্যাকসিনের জন্য আমাদের আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। এটি এখনো ডেভেলপিং পর্যায়ে আছে, পরিপূর্ণভাবে ডেভেলপ হয়নি। আমরা খোঁজ-খবর রাখছি।তিনি বলেন, যে সব দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। যখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো টিকার অনুমোদন দেবে আমরা সেই টিকা অবশ্যই আনার চেষ্টা করবো। আমরা এখনো সে মানের কোনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন পাইনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন পর্যন্ত কোনোটি অনুমোদন দেয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ডেঙ্গু টিকা নিয়ে গবেষণা করে টিকা তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগকে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্যও বলেন উপাচার্য।এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, সরকার দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে অত্যন্ত সচেতন। তবে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের ওপর ট্রায়ালের বিষয়ে পক্ষপাতী নয়। তবে এ টিকার অনুমোদন হলে সরকার আনার চেষ্টা অবশ্যই করবে।ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫২ জনে, যা এক বছরে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৮৬৮ জন।বুধবার (৯ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৫ হাজার ৬৯ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৮ হাজার ৮১৪ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫৫ জন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৫ হাজার ২৯০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৩৪ হাজার ১১৭ জন এবং ঢাকার বাইরের ৩১ হাজার ১৭৩ জন।এছাড়া জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১ হাজার ৩৬, জুনে ৫ হাজার ৯৫৬, জুলাইয়ে ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন ও আগস্ট মাসে এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।ডেঙ্গুতে মারা ব্যক্তিদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন, জুনে ৩৪ জন, জুলাই মাসে ২০৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে গত বছর ডেঙ্গুতে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন।সরকার মহামারি ঘোষণা না করলেও সারা দেশে মহামারির রূপ ধারণ করেছে ডেঙ্গু। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। এরই মধ্যে এক বছরে মৃত্যুর সংখ্যায় গড়েছে রেকর্ড। আগে বর্ষায় প্রকোপ বাড়লেও এখন প্রায় ১২ মাসই মিলছে রোগী। এ অবস্থায় আলোচনায় আসছে ডেঙ্গুর টিকা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ট্রায়ালে থাকলেও সব বয়সীদের জন্য কার্যকর কোনো টিকা আবিষ্কার হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি টিকার অনুমোদন দিলেও এতে রয়েছে সীমাবদ্ধতা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও দায়িত্বশীলরা এখনো টিকার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। অন্য দেশের দিকে নজর রাখছেন তারা। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গুর টিকা দেশে ব্যবহার করা যাবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। গণহারে এই টিকা প্রয়োগে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

অনুমোদনপ্রাপ্ত ডেঙ্গু টিকা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত শুধু ডেংভাক্সিয়া টিকা অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া এডিস মশাবাহিত এ রোগ প্রতিরোধে ট্রায়ালে আছে আরও পাঁচটি টিকা। এর মধ্যে তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে রয়েছে জাপানের তাকিদা কোম্পানির কিউডেঙ্গা। এছাড়া ট্রায়ালে আছে ব্রাজিলের ইনস্টিটিউট বুটানটান আর যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের যৌথ উদ্যোগের টিকা বুটানটান-ডিভি। যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর সানোফি এবং লুই পাস্তুর ইনস্টিটিউট মিলে ডেংভাক্সিয়া নামে টিকার অনুমোদন দেয়। তবে তা ব্যবহার করা যাবে শুধু ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে। যার আগে ডেঙ্গু সংক্রমণের ইতিহাস আছে এবং ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকায় বসবাস করলে টিকা নিতে পারবে।জাপানের তাকিদা ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ‘কিউডেঙ্গা’ টিকা ব্রাজিলে অনুমোদন পেয়েছে। গত ১৪ মার্চ দেশের ২৮ হাজার শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কের ওপর এ টিকা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

বৈশ্বিক গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান এফএমআই সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত ডেংভাক্সিয়া ও কিউডেঙ্গা অন্তত ২০টি দেশে অনুমোদন পেয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, পেরু ও এল সালভাদর উল্লেখযোগ্য।এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু টিকার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন। একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কিছু দেশে ডেঙ্গু টিকা অনুমোদন পেয়েছে। সেই দেশগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে ডব্লিউএইচও যখন অনুমোদন দেয়, তারপর আমরা শুরু করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নানা মহলে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চলছে। এটা যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের দেশের জন্য কার্যকরী হয়, বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিবেচনাধীন থাকবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের যোগাযোগ আছে।সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হলেও এখনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না। ভ্যাকসিনের জন্য আমাদের আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। এটি এখনো ডেভেলপিং পর্যায়ে আছে, পরিপূর্ণভাবে ডেভেলপ হয়নি। আমরা খোঁজ-খবর রাখছি।

তিনি বলেন, যে সব দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। যখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো টিকার অনুমোদন দেবে আমরা সেই টিকা অবশ্যই আনার চেষ্টা করবো। আমরা এখনো সে মানের কোনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন পাইনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন পর্যন্ত কোনোটি অনুমোদন দেয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ডেঙ্গু টিকা নিয়ে গবেষণা করে টিকা তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগকে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্যও বলেন উপাচার্য।এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, সরকার দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে অত্যন্ত সচেতন। তবে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের ওপর ট্রায়ালের বিষয়ে পক্ষপাতী নয়। তবে এ টিকার অনুমোদন হলে সরকার আনার চেষ্টা অবশ্যই করবে।ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫২ জনে, যা এক বছরে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৮৬৮ জন।

বুধবার (৯ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৫ হাজার ৬৯ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৮ হাজার ৮১৪ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫৫ জন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৫ হাজার ২৯০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৩৪ হাজার ১১৭ জন এবং ঢাকার বাইরের ৩১ হাজার ১৭৩ জন।এছাড়া জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১ হাজার ৩৬, জুনে ৫ হাজার ৯৫৬, জুলাইয়ে ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন ও আগস্ট মাসে এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ডেঙ্গুতে মারা ব্যক্তিদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন, জুনে ৩৪ জন, জুলাই মাসে ২০৪ জন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে গত বছর ডেঙ্গুতে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন।সরকার মহামারি ঘোষণা না করলেও সারা দেশে মহামারির রূপ ধারণ করেছে ডেঙ্গু। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। এরই মধ্যে এক বছরে মৃত্যুর সংখ্যায় গড়েছে রেকর্ড। আগে বর্ষায় প্রকোপ বাড়লেও এখন প্রায় ১২ মাসই মিলছে রোগী। এ অবস্থায় আলোচনায় আসছে ডেঙ্গুর টিকা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ট্রায়ালে থাকলেও সব বয়সীদের জন্য কার্যকর কোনো টিকা আবিষ্কার হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি টিকার অনুমোদন দিলেও এতে রয়েছে সীমাবদ্ধতা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও দায়িত্বশীলরা এখনো টিকার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। অন্য দেশের দিকে নজর রাখছেন তারা। স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গুর টিকা দেশে ব্যবহার করা যাবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। গণহারে এই টিকা প্রয়োগে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

অনুমোদনপ্রাপ্ত ডেঙ্গু টিকা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত শুধু ডেংভাক্সিয়া টিকা অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া এডিস মশাবাহিত এ রোগ প্রতিরোধে ট্রায়ালে আছে আরও পাঁচটি টিকা। এর মধ্যে তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে রয়েছে জাপানের তাকিদা কোম্পানির কিউডেঙ্গা। এছাড়া ট্রায়ালে আছে ব্রাজিলের ইনস্টিটিউট বুটানটান আর যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের যৌথ উদ্যোগের টিকা বুটানটান-ডিভি। যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর সানোফি এবং লুই পাস্তুর ইনস্টিটিউট মিলে ডেংভাক্সিয়া নামে টিকার অনুমোদন দেয়। তবে তা ব্যবহার করা যাবে শুধু ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে। যার আগে ডেঙ্গু সংক্রমণের ইতিহাস আছে এবং ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকায় বসবাস করলে টিকা নিতে পারবে।জাপানের তাকিদা ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ‘কিউডেঙ্গা’ টিকা ব্রাজিলে অনুমোদন পেয়েছে। গত ১৪ মার্চ দেশের ২৮ হাজার শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কের ওপর এ টিকা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

বৈশ্বিক গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান এফএমআই সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত ডেংভাক্সিয়া ও কিউডেঙ্গা অন্তত ২০টি দেশে অনুমোদন পেয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, পেরু ও এল সালভাদর উল্লেখযোগ্য।এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু টিকার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন। একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কিছু দেশে ডেঙ্গু টিকা অনুমোদন পেয়েছে। সেই দেশগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে ডব্লিউএইচও যখন অনুমোদন দেয়, তারপর আমরা শুরু করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নানা মহলে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চলছে। এটা যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের দেশের জন্য কার্যকরী হয়, বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিবেচনাধীন থাকবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের যোগাযোগ আছে।সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হলেও এখনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না। ভ্যাকসিনের জন্য আমাদের আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। এটি এখনো ডেভেলপিং পর্যায়ে আছে, পরিপূর্ণভাবে ডেভেলপ হয়নি। আমরা খোঁজ-খবর রাখছি।

তিনি বলেন, যে সব দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। যখনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো টিকার অনুমোদন দেবে আমরা সেই টিকা অবশ্যই আনার চেষ্টা করবো। আমরা এখনো সে মানের কোনো ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন পাইনি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন পর্যন্ত কোনোটি অনুমোদন দেয়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ডেঙ্গু টিকা নিয়ে গবেষণা করে টিকা তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগকে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্যও বলেন উপাচার্য।এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, সরকার দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে অত্যন্ত সচেতন। তবে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের ওপর ট্রায়ালের বিষয়ে পক্ষপাতী নয়। তবে এ টিকার অনুমোদন হলে সরকার আনার চেষ্টা অবশ্যই করবে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫২ জনে, যা এক বছরে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৮৬৮ জন।বুধবার (৯ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৫ হাজার ৬৯ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৮ হাজার ৮১৪ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫৫ জন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৫ হাজার ২৯০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৩৪ হাজার ১১৭ জন এবং ঢাকার বাইরের ৩১ হাজার ১৭৩ জন।

এছাড়া জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১ হাজার ৩৬, জুনে ৫ হাজার ৯৫৬, জুলাইয়ে ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন ও আগস্ট মাসে এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গুতে মারা ব্যক্তিদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন, জুনে ৩৪ জন, জুলাই মাসে ২০৪ জন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে গত বছর ডেঙ্গুতে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন।