মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি আলোচিত মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর রাজধানী ঢাকা-সহ সারাদেশে সামগ্রিক পরিস্থিতি মোটামুটি শান্ত রয়েছে। কেবলমাত্র কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। রায় ঘোষণার আগেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।তবে রায়ের পর কোথাও কোথাও সাধারন মানুষকে মিষ্টি ভিতরন করে উল্লাস করতে দেখাগেছে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। অতিরিক্ত চেকপোস্ট, মোবাইল টহল এবং সাদা পোশাকের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। রায়কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও সারা দিন উল্লেখযোগ্য কোনো সহিংস ঘটনা ঘটেনি।
এরই মধ্যে কলকাতাভিত্তিক কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত উসকানিমূলক খবর নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে। বহু দর্শক জানান, এসব সংবাদ বিভ্রান্তিকর ও উত্তেজনামূলক, যা বাস্তব পরিস্থিতির সঠিক প্রতিফলন নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, রায় ঘোষণার দিন রাজধানীর ৩২ নম্বর এলাকা থেকে সন্দেহজনক কার্যকলাপের অভিযোগে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ কী—তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় এগুলো ছিল সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
এদিকে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যেও সারাদেশে দৈনন্দিন কার্যক্রম প্রায় স্বাভাবিক ছিল। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেটসহ বড় শহরগুলোর বাজার-দোকান ও অফিস খোলা ছিল, পরিবহনও চলেছে নিয়মিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও স্বাভাবিক নিয়মে চালু ছিল। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার থাকায় যান চলাচলও ছিল তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালের প্রতি রায় ঘোষণার পর সাধারণ মানুষের মাঝে কিছুটা উদ্বেগ থাকলেও কোথাও বড় ধরনের বিক্ষোভ, সহিংসতা বা গণজমায়েতের ঘটনা ঘটেনি। বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, মানুষ সতর্ক থাকলেও দৈনন্দিন কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবেই সম্পন্ন করছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী কয়েকদিনও কঠোর নজরদারি অব্যাহত থাকবে। গুজব বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত না হতে জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হয়েছে।
সামগ্রিকভাবে এখনো দেশজুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তারা আশা প্রকাশ করেছে যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে।