ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫,
সময়: ০১:৪৫:৪৫ AM

ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি রিজভীর

ষ্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
10-03-2025 02:55:33 PM
ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি রিজভীর

দ্রুততম সময়ের মধ্যেই মাগুরায় শিশু ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন রুহুল কবির রিজভী।সোমবার সকালে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিবাদ র‌্যালীপূর্ব বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই দাবি জানান।তিনি বলেন, ‘‘ আমি সরকারের প্রতি বলতে চাই, যেটি মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেছেনৃদ্রুততম সময়ের মধ্যে আছিয়ার ওপর জুলুমকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। যে দৃষ্টান্ত দেখে অন্যান্য অপরাধীরা, অন্যান্য ধর্ষকরা, অন্যান্য দুস্যরা তাদের হৃদয়ে হৃদকম্পন তৈরি হয়।”‘‘ এট্ইা হচ্ছে আইনের শাসন, এটার জন্যই ১৫ বছর আমরা লড়াই করেছি। এর জন্য এতো আত্মত্যাগ, এর জন্য আরেক দুস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।”রিজভী বলেন, ‘‘  আজকে ধর্ষনের পরিমান বেড়ে গেছে। আজকে নারীরা নিরাপদ নয়। আজকে আপনার মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে তার প্রত্যাবর্তন কিভাবে হবে, ক্ষত-বিক্ষত হয়ে বাসায় ফিরবে না স্বাভাবিকভাবে বাসায় ফিরবে তার কোনো নিরাপত্তা নাই।”‘‘ সকলকে আবারও ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করতে হবে। সেখানে গণতন্ত্রমনা মানুষ, রাজনৈতিক দল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা, ছাত্র সংগঠনসহ সবাইকে একত্রিত হয়ে এই কাজটি করতে হবে।”নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে মাগুরায় এক শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে র‌্যালীপুর্ব এই সমাবেশ হয়। র‌্যালিটি কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেঁস্তোরার মোড় হয়ে র‌্যালীটি নয়া পল্টনে গিয়ে শেষ হয়।

‘আছিয়ার আইনি দায়িত্ব নিয়েছেন তারেক’

রিজভী বলেন, ‘‘ আছিয়্রা জন্য সমস্ত আইনি দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান। তিনি ঘটনার পর দ্রুত গতিতে নারী নেত্রীদের হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।”

‘প্রশাসনে কারা?’

রিজভী বলেন, ‘‘এখন তো অন্তবর্তীকালীন সরকার, স্বৈরাচার তো নাই। তাহলে কেনো এসব ঘটনা ঘটছে? প্রশাসনে কারা? আমরা অনেক বারই বলেছি, কোনো দিনই সমাজে ধর্ষণ, খুন, জখম, দুর্নীতির প্রসার ঘটবে না যদি আপনার প্রশাসন ঠিক হয়। প্রশাসন ঠিক থাকতো তাহলে এটি হতো না।”

‘‘ অনেকে বঞ্চিত ছিলেন শেখ হাসিনার আমলে। অনেক প্রমোশন পেয়েছেন, ডাবল প্রমোশন হয়েছেন। তাহলে আপনাদের মধ্যে যে ক্ষোভ ছিলো সেই ক্ষোভ থাকার কথা নয়। তাহলে তৃণমূলে প্রশাসনের কর্তৃত্ব প্রয়োগ হচ্ছে না কেনো? এটা তো একটা বড় প্রশ্ন। এর দায় তো যাবে অন্তবর্তীকালীন সরকারের ওপরে।”

‘ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’

সভাপতির বক্তব্যে মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, ‘‘ আমরা প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারকে বলব, আপনারা এর বিচার করুন, আমরা এর বিচার চাই। আছিয়ার যে বোনের শ্বাশুডী তারও বিচার চাইৃ এই শাশুড়ি একজন নারী এরা নারী নামের কলঙ্ক। এই কতিপয় নারীর জন্য আমরা নারী সমাজ অপমানিত হচ্ছি। সুতরাং আমি মনে করি, এই নারীকে ফাঁসির কাষ্টে ঝুলানো দরকার। আছিয়ার বোনের শ্বশুড়, আছিয়ার স্বামীর আমরা ফাঁসি চাই।”

‘‘ এ যে সরকার বলছে যে, ১৮০ দিন বা তিন মাস বা ছয় মাস লাগবে তদন্ত শেষ করতে। কেনো তদন্ত শেষ করতে এতো দিন লাগবে? যে তদন্তে আপনারা রিপোর্ট পেয়ে গেছেন যে, আছিয়ার বোন যেখানে প্রমাণ, আছিয়ার শাশুড়ি যেখানে প্রমাণ কেনো তাহলে আপনাদের দেরি করতে হবে? আমি তো মনে করি তিন দিনের মধ্যে এই ধর্ষকদের ফাঁসির কাষ্টে ঝুলানো উচিত? এদের শাস্তি যদি দ্রুত না দেন তাহলে আরো ধর্ষণ মামলাটি ঝুলে যাবে, আরও ঘটনা ঘটবে।”

তিনি বলেন, ‘‘ দ্রুত বিচার করুন। গত কয়েকদিনে আরও ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। মাগুরার ঘটনার বিচার অনতিবিলম্বে করতে হবে। তা না হলে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই যাবে। আমি দেখেছি গতকালকে ইয়েমেনে শিশু বাচ্চাকে ধর্ষণ করার জন্য দুই জনকে একদম জনসমক্ষে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করলো যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁকিয়ে দেখলো মৃত্যুদের দৃশ্য।”

‘‘ আমি আশা করব, বাংলাদেশে মাগুরাসহ সারাদেশের জনগনের সামনে এই মাগুরার ধর্ষকদের ফাঁসি কার্য্কর করা হোক। আমরা জেলখানায় এর বিচার চাই না, আমরা জনসমক্ষে এর বিচার চাই।”

‘ছাত্রদের জায়গা শিক্ষাঙ্গনে’

রিজভী বলেন, ‘‘ আমরা শুনি ডিসি অফিস, এসপি অফিস, মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন জায়গায় নাকি ছাত্ররা গিয়েৃ যারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র তাদের প্রতি তো আমাদের কৃতজ্ঞতা রয়েছেই, তাদের অবদান তো আমরা ভুলি না ৃ কিন্তু তারা যদি ডিসিকে নির্দেশ দেয়, তারা যদি এসপিকে নির্দেশ দেয় তারা যদি ডিসি-এসপির ঘরে বসে থাকে তাহলে আইন প্রয়োগ হবে কি করে?”‘‘ আরে ডিসি-এসপি অন্যায় করলে আপনি ক্যাম্পাসে তার প্রতিবাদ করুন। আপনার জায়গায় ক্যাম্পাস। আপনার হাতে বই থাকবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও কিভাবে মজবুত করা যায়, আরও কিভাবে শিক্ষার মেরুদন্ডকে মজবুত করা যায় সেটা করুন। আমি বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের অনুরোধ করবো আপনারা ক্যাম্পাসে অন্যায়ের প্রতিবাদ গড়ে তুলুন। আপনাদের কাজ না এসপির রুমে গিয়ে তদারকি করা, আপনাদের কাজ না ডিসির রুমে গিয়ে তদারকি করা, আপনাদের কাজ না বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে তদারকি করা।”

তিনি বলেন, ‘‘ একটা কথা আছে, বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। ছাত্রদের কাজ ক্যাম্পাস, ছাত্রদের কাজ ক্লাসরুমে, ছাত্রদের কাজ লাইব্রেরিতে।”মহানগর দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুর নার্গিসের সঞ্চালনায় সমাবেশে মহিলা দলের সহ-সভাপতি নেওয়া হালিমা আরলি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহানা আখতার শানু মহানগর উত্তরের সভানেত্রী রুমা আখতার, দক্ষিনের সদস্য সচিব লুনা ল্য়ালা প্র্রমূখ বক্তব্য রাখেন।