ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সময়: ০৭:০১:৪০ AM

সাভারে ছুরিকাঘাতে পথচারী ও তিন হকার আহত

এস এম মনিরুল ইসলাম,সাভার:
24-11-2024 07:01:40 AM
সাভারে ছুরিকাঘাতে পথচারী ও তিন হকার আহত

সাভার বাসস্ট্যান্ডে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে এক পথচারী ও তিন হকার গুরুতর আহত হয়েছে।  ২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব পাশে নতুন ওভারব্রিজ সংলগ্নে এ ঘটনা ঘটে। আহতদেরকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিশমাইল থেকে শুরু করে পাকিজা পর্যন্ত এলাকায় সন্ধ্যা হলেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কিশোর গ্যাংয়ের কয়েকটি গ্রুপ। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে মারামারিতে। কখনোবা নেশার তাড়নায় দূরপাল্লার গাড়ি থেকে নেমে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে কেড়ে নিচ্ছে তাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সাসহ মোবাইল। দিতে গড়িমসি করলে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। এমন নির্মমহত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। তবে দূর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও জামিনে এসে পুনরায় জড়াচ্ছে একই ঘটনায়। এমন আরেকটি ঘটনার সাক্ষী হলো সাভারবাসী। 

 

 

 

সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে সাধারণ এক পথচারীকে ফিটিং দিতে বাঁধা দেওয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে চার যুবক আহত হয়েছেন। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

 

 

 

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় দুই দফায় সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের নিউ মার্কেটের পাশে নতুন ওভারব্রিজের নিচে এ ঘটনা ঘটে।

 

 

 

আহত চার যুবক হলেন- শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার খায়েরচর গ্রামের সুলতান খানের ছেলে ফুটপাতের হকার লিটন(৩৫), লিটনের সহোদর ছোট ভাই সাগর (২৮), নজরুল (৩৮) ও ইমরান হোসেন লালু (২২)।

 

 

 

রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার মাছবাড়ি গ্রামের সফিউদ্দীনের ছেলে সোহেল নামে এক হকার জানান, লিটন আমার দোকানের কর্মচারী। সারাদিন দোকানদারি করে রাত ৮ টার দিকে সবকিছু গুছিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই। সাভার নিউমার্কেটের পাশে নতুন ওভারব্রিজের নিচে একটি চায়ের দোকানে চা খেতে দাড়াই। এর মধ্যে ৮/১০ জন উঠতি বয়সের যুবক একজন সাধারণ পথচারীকে মারধর করছে দেখে মারধরের বিষয়ে কারণ জানতে চাই। এতে তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা বিভিন্ন অবান্তর প্রশ্ন করতে থাকে। এটা দেখে কয়েকজন হকার এগিয়ে এসে তাদের চলে যাইতে বললে একজনকে তারা থাপ্পড় মেরে বসে। পরে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। আমিও বাসায় চলে যাই।

 

সোহেল আরও জানান, পরে জানতে পারি তারা চলে যাওয়ার ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর তাদের সাথে আরো একদল কিশোর যুক্ত হয়ে সাধারণ হকারদের ওপর হামলা চালায়। 

 

এ সময় লিটন, সাগর, নজরুল ও ইমরান হোসেন লালুকে এলোপাতাড়িভাবে ছুরিকাঘাত করা হয়। সুইস গিয়ার দিয়ে কোপানো হয়। লোহার পাইপ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পোটানো হয়। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

 

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাত ২ টা ৩০ মিনিটে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে চারজনের শরীরের বিভিন্ন অংশে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এছাড়া গুরুতর হওয়ায় তাদের দুইজনের তাৎক্ষণিক অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আরো একজনের প্রস্তুতি চলছে। তারা এখন আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। তবে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

 

জানতে চাইলে হকার্স লীগের সাভার পৌর শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে একজন পথচারী ও তিনজন সাধারণ হকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। এ ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার ডিউটি অফিসার সাব্বির আহমেদ বলেন, চার যুবকের ওপর হামলার ঘটনাটি এইমাত্র শুনেছি। এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।