ঢাকা, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫,
সময়: ০৫:২০:৫৫ PM

গ্রেপ্তার নয় আত্মসমর্পণ,ন্যায়বিচার পাব:আইনজীবী

ষ্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
22-10-2025 01:38:07 PM
গ্রেপ্তার নয় আত্মসমর্পণ,ন্যায়বিচার পাব:আইনজীবী

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়া সেনা কর্মকর্তাদের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন বলেছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি, বরং তারা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়েই এসব সিনিয়র ও অভিজ্ঞ সামরিক কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছেন বলে তিনি জানান।বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন।তিনি বলেন, “আমার মক্কেলরা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন। প্রক্রিয়াগত কারণে হয়তো তাদের ‘গ্রেপ্তার’ দেখানো হয়েছে, কিন্তু তারা কখনোই গ্রেপ্তার ছিলেন না।”এর আগে সেনা সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল, সেনা আইন অনুযায়ী তারা ‘আর্মি এটাচমেন্টে’ (সেনা হেফাজতে) ছিলেন।

ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন আরও জানান, ট্রাইব্যুনালে তিনটি আবেদন দাখিল করা হয়েছে—একটি জামিন আবেদন, একটি ‘কমিউনিকেশন প্রিভিলেজ’ (যোগাযোগের বিশেষ সুবিধা) এবং একটি সাব-জেলে রাখার আবেদন। তবে সাব-জেলের বিষয়টি জেল কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারভুক্ত হওয়ায় সেটি আর প্রেস করার প্রয়োজন হয়নি।

তিনি বলেন, “ট্রাইব্যুনাল আবেদনগুলো শুনেছেন এবং এসব আবেদনের ওপর পরবর্তী তারিখে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।”

মূল অপরাধীরা বিদেশে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করে ব্যারিস্টার সারোয়ার বলেন, “যারা প্রকৃত অপরাধী—যেমন জেনারেল কবির, জেনারেল আকবর, তারেক সিদ্দিকী—তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। কিন্তু আমার মক্কেলরা সুনাগরিক হিসেবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন।”

তিনি আরও জানান, একজন রাজসাক্ষী (সাবেক আইজিপি) বলেছেন—এই ঘটনাগুলো প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং শেখ হাসিনার নির্দেশে সংঘটিত হয়েছিল, কর্মকর্তাদের এতে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না।

ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন বলেন, “আমার মক্কেলদের ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ঘোষিত সাব-জেল স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে। যারা স্বেচ্ছায় আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করেন, তাদের এই পদক্ষেপই প্রমাণ করে যে তারা কোনো অন্যায় করেননি। তারা আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালতের মুখোমুখি হবেন এবং ন্যায়বিচার পাবেন বলে আমরা আশা করি।”

উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি পৃথক মামলায় ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে বুধবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ হাজির করা হয়।

শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

কারাগারে পাঠানোর নির্দেশপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন—
মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।