ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪,
সময়: ০৭:২৯:৩৪ AM

বনানীর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিকে তালা

স্টাফ রিপোর্টার ।।দৈনিক সমবাংলা
19-09-2024 07:29:34 AM
বনানীর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিকে তালা

রাজধানীর বনানীর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লিমিটেড ও ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের অভিযোগ, অবৈধভাবে তাদের ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করেছে অধিদপ্তর। তারা অভিযোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলের নির্দেশে বেআইনিভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালায়। এসময় প্রতিষ্ঠানটির তালা দিয়ে দেওয়া হয়। তবে কী কারণে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয় এ বিষয়ে অভিযানে থাকা কোনো কর্মকর্তা কথা বলেননি। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের  পরিচালক খন্দকার আবু  আশফাক অভিযোগ করেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে কিছু ব্যক্তির ইন্ধনে অবৈধভাবে বন্ধ থাকা ক্লিনিকে পরিদর্শনের নামে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে ডায়গনেস্টিক সেন্টারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।তিনি বলেন, অতি উৎসাহী হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার কার্যক্রম বন্ধ করতে একের পর এক নোটিশ দিয়ে আসছিল। তার মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি নিজেরাই কার্যক্রম বন্ধ করে নোটিশ ঝুঁলিয়ে দেয়। অথচ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লোকজন প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভিতরে প্রবেশ করে। প্রেসক্রিপশন পয়েন্টের গেটে ঝুলিয়ে দেওয়া নোটিশে লেখা রয়েছে, ‘অনিবার্য কারণবশত প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লি. সাময়িক বন্ধ থাকবে।’ তবে কোন কর্তৃপক্ষ নোটিশটি ঝুলিয়েছে তার কোনও উল্লেখ করা হয়নি নোটিশে।

অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসা প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার দখলে নিতে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। তারাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগসাজশ করে অভিযানের নামে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করেছে।খন্দকার আবু আসফাক আরও বলেন, গত ১৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি পরিদর্শন দল প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে। পরবর্তীতে একই মাসের ২২ তারিখ পেছনের তারিখ দেখিয়ে একটি চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন অমান্য; অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের মাধ্যমে জনগণের হয়রানি; মেয়াদ উত্তীর্ণ রি-এজেন্ট এবং অদক্ষ জনবলের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার অভিযোগ আনা আনা হয়। পরবর্তীতে আমরা ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও লাইসেন্স স্থগিত করার আদেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ আপিল করলেও তা অগ্রাহ্য করা হয়। পরে নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করলেও তারা রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে। এরপর আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেছি। রিটটি এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এরপরও তারা আজ আবার এসে বন্ধ ডায়গনেস্টিক সেন্টারে আবারও তালা লাগিয়ে দিয়ে যায়। 

প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বনানীর ডায়গনেস্টিক সেন্টারটি গত ১৬ বছর ধরে ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হচ্ছে। এ বছরের ১৮ জানুয়ারি ৬ কোটি টাকা দলিলমূল্যে কিনে নেয় ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। অথচ এই সম্পত্তির দাম ৪৫ কোটি টাকার বেশি। নামমাত্র মূল্যে এই সম্পত্তি কিনে নিলেও বাড়ি ছাড়ার কোনো নোটিশ দেয়নি। বরং তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ব্যবহার করে এই প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।অভিযানে থাকা বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে আসবেন জানিসয়ে আমাদের সহায়তা চান। পরে থানা পুলিশ সেখানে গিয়েছে।অভিযানে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট ইরতেজা হাসান গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।