ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫,
সময়: ০৩:২৭:১০ PM

জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাই হচ্ছে চীনের নীতি

স্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
11-03-2025 05:38:24 PM
জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাই হচ্ছে চীনের নীতি

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, কোনো সুনির্দিষ্ট সরকার নয়, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাই চীনের নীতি। একইভাবে চীনের জনগণও বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায়।মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাজধানীর হোটেল শেরাটনে ‘বাংলাদেশে চীনের জাতীয় ভাবমূর্তি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস (সিএ) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ ও চীন পরস্পর পরীক্ষিত বন্ধু। ঐতিহ্যগতভাবেই সব দেশের সরকারপ্রধানকে চীন সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে সুনির্দিষ্ট সরকার নয়, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাই চীনের নীতি।একইভাবে চীনের জনগণও বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায়। আলোচনা অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল আলোচনার ভিত্তিতে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠবে বলে আশা রাখি।চীনা রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই। চীন এই সংকট সমাধানে মিয়ানমারের সরকার ও এথনিক  গ্রুপের সঙ্গে কাজ করছে। সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সম্প্রদায়েরও যৌথ প্রচেষ্টা থাকতে হবে।

 

চীনা গণতন্ত্র নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রতিটি দেশের গণতন্ত্রের নিজস্ব ধরন আছে। আমাদেরও সেটা আছে। তবে আমাদের গণতন্ত্র জনগণের জন্য।ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী। চলতি বছর দুই দেশের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। এ লক্ষ্যে আমরা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও বাড়াতে চাই।

আলোচনা অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর অল্টারনেটিভসের  (সিএ) নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। জরিপ প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ৫ হাজার ৩৩৫ জন জরিপে অংশ নিয়েছেন। জরিপে ৬০ শতাংশ লোক মনে করেন, চীনের বৈশ্বিক রাজনীতি উন্নয়নকেন্দ্রিক। জরিপে উঠে এসেছে, উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশিদের মধ্যে ২৫ শতাংশ লোকের  প্রথমেই মনে আসে চীনের কথা। আর ৫৩ শতাংশ লোক চীনে গিয়ে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী। বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতার নামে চীনা ঋণের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ৪২ শতাংশ লোক মনে করেন,  রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন সামান্যমাত্রায় কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির প্রাক্তন রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস বলেন, যারা চীনের প্রতি আগ্রহী, তাদের এই জরিপ খুব কাজে লাগবে। জরিপে বাংলাদেশ-চীনের দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি, রাজনীতি, বাণিজ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমাদের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার চীন। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি বাড়াতে হবে। তবে দুই দেশের মধ্যে ভাষাশিক্ষা বাড়ানো প্রয়োজন বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের অধ্যাপক ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কানেক্টিভিটি আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বাংলাদেশ থেকে সড়ক পথেই মিয়ানমার হয়ে চীনে যাতায়াত সম্ভব। চীনে অতীতে উচ্চ পর্যায়ের সফর হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরে যাচ্ছেন। এই সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উচ্চতায় যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন ও রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক সৈয়দ শাহনেওয়াজ মহসিন।