ঢাকা, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪,
সময়: ০৭:৫২:৩২ PM

সংকট নিরসনে হাসানাত আবদুল্লাহ ভরসা

জেলা প্রতিনিধি।। দৈনিক সমবাংলা
13-11-2024 07:52:32 PM
সংকট নিরসনে হাসানাত আবদুল্লাহ ভরসা

আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্। বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি, এক অগ্নিপুরুষ। রাজনীতির কিংবদন্তী। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক । আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ। রাজনীতির এ কিংমেকার এক সময়ের বিএনপি অধ্যুষিত বরিশালকে আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র ঘাঁটিতে রূপান্তরিত করেছেন । তার দূরদর্শি নেতৃত্বে গোপালগঞ্জের মতো বরিশালও এখন আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। দুঃসময়ের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা পার্বত্য শান্তি চুক্তির প্রণেতা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ তার মেধা.মনন, প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দিয়ে আ’লীগকে বরিশালসহ গোটা দক্ষিনাঞ্চলে শক্তিশালী ও সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে এক অপ্রতিদ্বন্ধী রাজনৈতিক দলে রূপান্তর করেছেন। তার নেতৃত্বে আ’লীগ নেতা-কর্মীদের সাংগঠনিক তৎপরতায় এ অঞ্চলে বিএনপি-জামায়াত জোট নিস্প্রভ হয়ে পড়েছে।

 

বরিশালে সিটি কর্পোরেশন,জেলা পরিষদ,উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে আ’লীগ প্রার্থীদের বিজয়ী করতে পলিসি মেকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী আদর্শের এ নেতা। রাত-দিন একাকার করে তিনি আ’লীগকে সুসংগঠিত ও দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে শহর থেকে গ্রাম আর গ্রাম থেকে গ্রামান্তর ছুঁটে বেড়িয়েছেন। তার দূরদর্শিতায় বরিশালের সব জনপ্রতিনিধি এখন আ’লীগের। নেতা-কর্মীদের সুখ-দুঃখের ভাগীদার মুজিব অন্তঃপ্রাণ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ কালক্রমে নেতা-কর্মীদের আস্থা ও ভরসার প্রতিক এবং শেষ ঠিকানায় পরিণত হয়েছেন।

 

শুধু বরিশালেই নয় জাতীয় রাজনীতিতেও তার সরব উপস্থিতি রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এক নম্বর সদস্য। ১৯৯৭ সালে অশান্ত পার্বত্য অঞ্চলে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিতে ‘শান্তি চুক্তি’ সম্পাদনের মাধ্যমে তৎকালীণ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ অগ্রণী ভূমিকা পালণ করে বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী ও আ’লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি ইতিহাসের পাতায় নিজেরও নাম লিখিয়েছেন।

 

কুুচক্রিরা পার্বত্য এলাকা আবারও অশান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হওয়ায় সেখানে শান্তির ধারা অব্যাহত রাখতে এবং পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিজ্ঞ রাজনীতিক বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ৭১’র রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ এমপিকে মন্ত্রীয় পদ মর্যাদায় পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহবায়কের গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেন। এছাড়াও তাকে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যও করা হয়।

 

১৯৭১ সালে মামা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে সেই সময়ের সাহসী টগবগে যুবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে বরিশাল অঞ্চলে মুজিব বাহিনী প্রধান হিসেবে মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য মনে করে সন্মূখ সমরে জীবন পণ লড়াই করে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ বির্নিমাণে অগ্রণী ভূমিকা পালণ করেন।

 

স্বাধীনতার পর তরুণ বয়সে তিনি বরিশাল পৌরসভা নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শুধু “চমক” সৃষ্টিই করেননি সেই সময় তিনি তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞারও পরিচয় দেন। সেই নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে তখনই ফুঁটে ওঠে আজকে তার যে অবস্থান তার আগাম চিত্র। পরবর্তীতে বরিশাল পৌরসভার সফল ও জননন্দিত চেয়ারম্যান হিসেবে সেই থেকে উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। পরবর্তীতে বরিশাল-১ (আগৈলঝাড়া-গৌরনদী) আসনে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে গোটা বরিশাল অঞ্চলে উন্নয়নের রূপকার হিসেবে আর্বিভূত হন।

 

বরিশাল সিটি কর্পোরেশেন,বিভাগ,শিক্ষা বোর্ড,বিশ্ববিদ্যালয়,পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠা,শেখ হাসিনা সেনানিবাস,দোয়ারিকা-শিকারপুর ও দপদপিয়া ব্রিজ নির্মাণসহ বরিশালের সার্বিক উন্নয়নে তার অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। ফলে তিনি আপামর বরিশালবাসীর অভিভাবকের আসনে অধিষ্টিত হয়েছেন।

 

১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কালরাতে রক্তঝড়া অচিন্তনীয় বিয়োগান্তুক অধ্যায়ের শোকগাথাঁয় মামা জাতির জন্ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে বাবা তৎকালীণ কৃষিমন্ত্রী ও কৃষক কুলের নয়নের মনি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও নিজের শিশু পুত্র সুকান্ত আব্দুলাহ সহ পরিবারের অনেক স্বজনকে হারান তিনি।

 

সেদিন রাতে মৃত্যুর দুয়ার থেকে মহান আল্লাহর অপার কৃপায় অলৌকিকভাবে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ,বুলেটবিদ্ধ তার স্ত্রী শাহানারা আবদুল্লাহ ও তার কোলে থাকা সেই সময়ের দেড় বছরের শিশু পুত্র আজকের বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ প্রাণে বেঁচে যান। ৭৫’র পর সেনা ও স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান এবং এরশাদ ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে (৯১-৯৬ ও ২০০১-২০০৬) মিথ্যা মামলাসহ নানা ভাবে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও তার পরিবারকে হয়রানির শিকার হতে হয়। ১/১১’র সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলেও ষড়যন্ত্রের শিকার হন তিনি।

 

তার প্রতি রয়েছে গোটা বরিশালের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অপার ভালোবাসা,আবেগ-অনুভূতি আর শ্রদ্ধাবোধ। দক্ষিণাঞ্চলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ তাকে অভিভাবকের আসনে অধিষ্টিত করেছেন। ঠাই দিয়েছেন হৃদয়ের মনিকোঠায়।

 

সাম্প্রতিক সময়ে ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে পুনরায় দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় সাময়িক যে রাজনৈতিক ইমেজ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে তা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা দিয়ে অচিরেই কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন এবং তিনি বরিশালে ফিরলেই পাল্টে যাবে রাজনীতির গোটা দৃশ্যপট।

 

ইতোমধ্যে তাকে বরিশাল সিটি নির্বাচনে টিম লিডার করা হয়েছে। দলের প্রশ্নে আপসহীন পোড় খাওয়া রাজনীতিক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ মান-অভিমান ভুলে ও সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সবিশেষ তার ছোট ভাই বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাতকে বিজয়ী করতে ‘মূখ্য’ ভূমিকা পালন করে ‘চমক’ সৃষ্টি করবেন। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক অভিজ্ঞমহল।