বিজ্ঞজনেরা বলেন—রাগি মানুষের মন আসলে ভালো। অন্যায় দেখলে যে মানুষটি প্রতিবাদে ফেটে পড়ে, তার ভেতরে থাকে ন্যায়বোধ ও মানবিকতার গভীর দায়বদ্ধতা। মির্জা আব্বাস তেমনই একজন মানুষ। তার রাগ ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়; বরং অন্যায়, অনিয়ম ও অবিচারের বিরুদ্ধে। যাকে তিনি ভালোবাসেন, তাকে তিনি নিঃশর্তভাবে ভালোবাসেন—মানুষ হিসেবে এটাই তার বড় পরিচয়।
মির্জা আব্বাসকে ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে যে অপমান ও বিভ্রান্তিকর প্রচার চালানো হচ্ছে, তা শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়—বাংলাদেশের রাজনীতিকেই অপমান করে। তিনি একজন বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা; দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে ঢাকার রাজনীতিতে তার সুস্পষ্ট প্রভাব রয়েছে। জনপ্রিয়তার এই জায়গাটিই কোনো কোনো মহলের রাজনৈতিক ঈর্ষা ও অসহিষ্ণুতার কারণ হয়ে উঠেছে বলে অনেকের অভিমত।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে মির্জা আব্বাস তথা বিএনপিকে লক্ষ্য করে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই মির্জা আব্বাসের রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করা এবং তাকে জনসমর্থন থেকে বিচ্ছিন্ন করা। এ প্রচেষ্টায় তাকে নানাভাবে ছোট করা, কুৎসা রটানো, এমনকি ভয়ংকর অভিযোগে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তার সন্তানসম বয়সী তরুণদের নিয়েও অপপ্রচার চালানো হয়েছে—চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, এমনকি হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগের গল্প বানিয়ে একটি ভিলেন-ইমেজ তৈরি করার অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়।
বাস্তবতা হলো, গত পনেরো বছরের আওয়ামী লীগ সরকার নানা চাপ ও প্রতিকূলতার মধ্যেও মির্জা আব্বাসকে তার আদর্শিক অবস্থান থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। তিনি তার রাজনৈতিক নীতিতে অবিচল থেকেছেন—এটাই তার সবচেয়ে বড় শক্তি। এই দৃঢ়তা ও জনপ্রিয়তাই হয়তো তাকে বারবার টার্গেটে পরিণত করছে।
সাম্প্রতিক একটি ঘটনায় দেখা গেছে, একই আসনের প্রার্থী হাদি—যাকে মির্জা আব্বাস সন্তানের মতো স্নেহ করেন—সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়েছেন। খবর পাওয়া মাত্রই মির্জা আব্বাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান এবং খোঁজখবর নেন। মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে করা এই পদক্ষেপকে ঘিরেও হাসপাতালের গেটে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভুয়া প্রচার চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। প্রশ্ন উঠছে—এই নাটক কি মির্জা আব্বাসকে ‘খুনি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টা, নাকি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার আরেকটি কৌশল?
এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও সতর্ক হওয়া জরুরি। একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়; তবে তা প্রতিহত করতে প্রয়োজন সচেতনতা, তথ্যভিত্তিক অবস্থান ও আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকার। একই সঙ্গে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানোর পেছনে কারা জড়িত, তাদের পরিচয় ও উদ্দেশ্য দ্রুত উদ্ঘাটন করে জনসম্মুখে আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সত্য উদ্ঘাটিত হলে অপপ্রচার আপনা-আপনিই ভেঙে পড়বে।
সবশেষে বলা যায়, মির্জা আব্বাস একজন রাগি মানুষ হতে পারেন, কিন্তু সেই রাগ অন্যায়ের বিরুদ্ধে। তিনি জনপ্রিয়, কারণ তিনি মানুষের পাশে দাঁড়ান। রাজনীতিতে ভিন্নমত থাকবে—কিন্তু কুৎসা ও ষড়যন্ত্র দিয়ে একজন বর্ষীয়ান নেতার চরিত্রহনন গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিপন্থী। ইতিবাচক রাজনীতি, মানবিকতা ও ন্যায়বোধ—এই মূল্যবোধেই মির্জা আব্বাস আজও দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। #