ঢাকা, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫,
সময়: ০৭:২৯:০৩ PM

রাজবাড়ীর মিষ্টি পান ৮ দেশে রপ্তানি বন্ধ,লোকসানে চাষীরা

রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা।। দৈনিক সমবাংলা
03-12-2025 06:21:25 PM
রাজবাড়ীর মিষ্টি পান ৮ দেশে রপ্তানি বন্ধ,লোকসানে চাষীরা

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি পান চাষে উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত। এ উপজেলার পানের সুখ্যাতি বহুদিন ধরে। এখানে সাধারণত মিষ্টি ও সাচি দুই জাতের পান উৎপাদন হয়। এখানকার মিষ্টি পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হতো আট দেশে। করোনাকালীন সময় থেকে পান রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চাষিরা বলছেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা, পানের দাম বৃদ্ধি ও পানের রোগের ঔষধ তৈরী হলে পানের আবাদ আরও বাড়বে। পান রপ্তানি কার্যক্রম চালু হলে প্রতিবছর কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। আর কৃষি বিভাগ বলছে, পান চাষীদের সব সময় পরামর্শ দেওয়া হয়। কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাগেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলার আবহাওয়া ও পরিবেশ পান চাষের খুবই উপযোগী। বালিয়াকান্দির আড়কান্দি, বেতেঙ্গা, চরআড়কান্দি, ইলিশকোল, স্বর্প বেতেঙ্গা, খালকুলা, বালিয়াকান্দি, বহরপুর এলাকায় ব্যাপক পানের আবাদ হয়। এখানে পানের ৭১৪ বরজ রয়েছে। এর মধ্যে ১৫৬টি সাচি পান বরজ ও ৫৫৮টি মিষ্টি পানের। এ বছর ৭৪ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ করা হয়েছে।
পানচাষি সুজিত কুমার সরকার বলেন, ৩টি পানের বরজ ছিল। এবছর পানের দাম কম, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের দাম বেশি হওয়ার কারণে দু’টি পান বরজ ভেঙ্গে ফেলেছি। এখন একটি পান বরজ আছে। বিদেশে পান রপ্তানি বন্ধ থাকার কারণে পান চাষে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
পান চাষী নিকবার মন্ডল, শফিক মোল্লা, জালাল মল্লিক বলেন, তাদের পূর্ব পুরুষের আমল থেকে পানের চাষ করে আসছেন। পান চাষ লাভজনক হলেও তাদের মাঝে মধ্যে পড়তে হয় নানা সমস্যায়। পাতা বা গাছ রোগাক্রান্ত হলে সঠিক পরামর্শ পান না। এ অঞ্চলের সাচি ও মিষ্টি পান প্রচুর জন্মে। এখানকার মিষ্টি পান রাজবাড়ীসহ পার্শ্ববর্তী জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করা হয়। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহজশর্তে ঋণ পেলে এখানকার চাষিরা পান চাষে আরও উৎসাহী হতেন।
তারা বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকে পান রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এর পর গত বছর পানের গোড়া পচা রোগে আক্রান্ত হয়ে লোকসান গুনতে হয়। এ বছর লাভের আশা করলেও পানের দাম না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে। পানের রোগ হলে বিপদে পড়তে হয়। কৃষি কর্মকর্তারাও কোনো পরামর্শ দিতে পারেন না। তাই বিষয়টি নিয়ে গবেষণার দাবি জানাই।
চাষিরা আরও বলেন, পান অর্থকরী ফসল হলেও তাদের কোনো সহযোগিতা নেই। কৃষি অফিস থেকে তাদের কোনো প্রকার সহযোগিতা দেওয়া হয় না। সরকারিভাবে তাদের সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করলে পান চাষকে আরও লাভজনক ও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হবে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, এখানকার মিষ্টি পান এলাকার চাহিদা মিটিয়ে আট দেশে রপ্তানি করা হতো। এখন রপ্তানি বন্ধ রযেছে। পান চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। আমরা আশা করছি পান আবার রপ্তানী শুরু হবে।