ঢাকা, শনিবার, ১০ মে ২০২৫,
সময়: ০৯:১৫:৩৪ PM

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বিপজ্জনক?

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন
10-05-2025 05:35:32 PM
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত বিপজ্জনক?

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র রূপ ধারণ করেছে। অতীতের তুলনায় এবারের সংঘর্ষ অনেকটা ভিন্ন এবং আরও বিপজ্জনক। কারণ যুদ্ধ এখন কেবল কাশ্মীরেই সীমাবদ্ধ নয়—উভয় পক্ষই একে অপরের সামরিক ঘাঁটি ও বড় শহরগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।ভারত বলেছে, পাকিস্তান উচ্চগতির ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে একাধিক সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলা করেছে। পাল্টা জবাবে ভারতও পাকিস্তানের রাডার ও কমান্ড সেন্টারে আঘাত হানে। একইসঙ্গে ভারতের দাবি, পাকিস্তানি সেনারা সামনের সীমান্তে অগ্রসর হচ্ছে, যা সংঘর্ষ আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। তবে উভয় পক্ষই বলেছে, অপর পক্ষ যদি সংঘর্ষ না বাড়ায়, তাহলে তারাও তা করবে না।এর আগের দিন ভারত জানায়, পাকিস্তানের ৩০০ থেকে ৪০০ ড্রোন অনুপ্রবেশের জবাবে তারা সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহার করেছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ৭৭টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। সীমান্তজুড়ে ভারী গোলাগুলি চলছে।বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই দেশের মধ্যে এবারের সংঘর্ষ ২০১৬ ও ২০১৯ সালের মতো সীমিত আকারে নেই। ভারতের হামলা এবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত, যেখানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল অবস্থিত। ১৯৭১ সালের পর এত ব্যাপক সংঘর্ষ এই প্রথমবার দেখা যাচ্ছে।

যুদ্ধের ধরন বদলে দিচ্ছে ড্রোন
এই সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলছে ব্যবহৃত উন্নত অস্ত্র: ভারতের রয়েছে ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমান, ইসরায়েলের হারপ আত্মঘাতী ড্রোন, রাশিয়ার এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। পাকিস্তানের রয়েছে চীনের জে-১০সি যুদ্ধবিমান, আমেরিকান এফ-১৬, চীন ও তুরস্কের ড্রোন। ভারত সন্দেহ করছে, ৮ মে রাতে পাকিস্তান যে ড্রোন ব্যবহার করেছে তা তুরস্কের আসিসগার্ড সংগর ড্রোন।

আধুনিক সশস্ত্র ড্রোন যুদ্ধের ধরন পাল্টে দিচ্ছে। এটি একদিকে আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে তুলছে, আবার অন্যদিকে নাগরিক ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কিছুটা কমাচ্ছে। তবে ড্রোনের ধারাবাহিক আক্রমণ কখন শুরু বা শেষ হচ্ছে তা বোঝা কঠিন। এটি ‘কে আগে থামবে’ সেই প্রশ্নকে আরও জটিল করে তুলেছে।তথ্য যুদ্ধ
তথ্য যুদ্ধের পরিবেশও বদলেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে সহজেই ভুয়া ছবি ও তথ্য তৈরি হচ্ছে। ৮ মে রাতে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচারিত হয়—যেমন পাকিস্তানে অভ্যুত্থান, ইসলামাবাদ দখল বা করাচি বন্দরে হামলার খবর। পরে করাচি বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের সামাজিক মাধ্যম অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে এসব ভুয়া বার্তা ছড়ানো হয়েছে।তবে কিছু ইতিবাচক দিকও আছে। দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। উভয় পক্ষই সফল হামলার দাবি করে নিজেদের বিজয় দেখিয়ে পিছু হটতে পারে। তবে দুই পক্ষ সামরিক পদক্ষেপ বাড়াতে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে উঠতে পারে।