কুমিল্লার হোমনায় পরকীয়ার জেরে প্রবাসফেরত স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নিহতের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৩৫), হোমনার কারারকান্দি এলাকার মৃত ইউসুফ মিয়ার ছেলে মো. কুদ্দুস (৩২), মঙ্গলকান্দি গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে আব্দুল খালেক (২৮) ও কারারকান্দি গ্রামের মৃত সাধন মিয়ার ছেলে মো. রাজিব (২৬)। কুমিল্লার অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) আবু ইউসুফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, সৌদি প্রবাসী আব্দুল জলিলের (৪৫) স্ত্রী শাহনাজ বেগমের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল হোমনা উপজেলার গোয়ারী ভাঙ্গা গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে টিউবওয়েল ব্যবসায়ী মো. শাহজাহানের। এর জের ধরে ২০১৩ সালের ৯ জুন চিকিৎসার কথা বলে জলিলকে ঢাকায় নেন স্ত্রী শাহনাজ বেগম। পরে ঢাকা থেকে ফেরার পথে পরিকল্পিতভাবে আসামি কুদ্দুস, খালেক ও রাজিবকে সঙ্গে নিয়ে আব্দুল জলিলকে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে যান।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে হোমনা থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান হোমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল বাকী। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরবর্তী সময়ে জামিনে বের হয়ে পালিয়ে যান স্ত্রী শাহনাজ বেগমসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর আসামিরা। ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন এসআই আব্দুল্লাহ আল বাকী। ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।রায়ে নিহত জলিলের স্ত্রী শাহনাজ বেগম, আসামি কুদ্দুস, খালেক ও রাজিবের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জলিলের স্ত্রী শাহনাজ বেগমের পরকীয়া প্রেমিক শাহজাহানের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।