
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাদের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করবে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর)। এদিন রাজধানীসহ সারাদেশে একাধিক কর্মসূচির আয়োজন করবে দলটি।এ উপলক্ষে ছয়দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে রয়েছে- পতাকা উত্তোলন, শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন, জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা ও র্যালি, নয়াপল্টন থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, উপজেলা ও পৌরসভায় কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ, মৎস্য অবমুক্তকরণ, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও ঢাকায় গোলটেবিল আলোচনা। এছাড়া বিশেষ ক্রোড়পত্র ও পোস্টারও প্রকাশ করেছে দলটি।প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল জনগণকে জাতীয়তাবাদী আদর্শে একত্রিত করা। এই দিনটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। তিনি মনে করিয়ে দেন, স্বাধীনতার পর একদলীয় শাসন ব্যবস্থা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল, সেই সময়ে শহীদ জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন ও নাগরিক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
অন্য এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি আর বলেন, দুঃশাসনের মধ্যেও দুর্বার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে খালেদা জিয়া অদম্য সাহসের প্রতীক হয়ে আছেন। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শহীদ হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি শ্রদ্ধা জানান ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।দীর্ঘ দেড় যুগ পর তুলনামূলক অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশে এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে দলটি। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। তার মধ্যেই সাতচল্লিশে পা দিল বিএনপি।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার রমনা রেস্তরাঁয় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে, আবার দীর্ঘ সময় কাটিয়েছে আন্দোলনের রাজনীতিতে। গত দেড় যুগ রাজপথে থেকেই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান হত্যার পর দলের নেতৃত্বে আসেন খালেদা জিয়া। তার নেতৃত্বে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে জয়ী হয়ে ১৯৯১ সালে বিএনপি বিপুল সমর্থনে সরকার গঠন করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও ক্ষমতায় আসে দলটি। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ও সংগঠনকে নতুনভাবে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করছেন।গণ-অভ্যুত্থানোর পর বিএনপির সামনে যেমন নতুন সুযোগ এসেছে, তেমনি তৈরি হয়েছে নানা চ্যালেঞ্জও। ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য ধরে রাখা, অন্তর্র্বতী সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন আদায় করা, তরুণ ভোটারদের আস্থা অর্জন, ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন ও দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন সামাল দেওয়া- সবকিছুই এখন দলটির নীতিনির্ধারকদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।