
হবিগঞ্জের ৩৮ জনসহ অন্তত ৭০ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে নিয়ে ভূমধ্যসাগর হয়ে লিবিয়ার ত্রিপলি থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করা একটি নৌকার খোঁজ মিলছে না ১০ দিন ধরে। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ভোরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে থাকা হবিগঞ্জের নিখোঁজদের স্বজনদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।নিখোঁজ হবিগঞ্জবাসীর বেশিরভাগই জেলা সদরের উমেদনগর, বানিয়াচং উপজেলার সদর ও তারাসই এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা ও পশ্চিমভাগ গ্রামের বাসিন্দা।নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা তলাবপাড়া মহল্লার আলফাজ মিয়া রনি (২১), মোজাক্কির আহমেদ (২১), সিয়াম জমাদার (২১) ও মিজান আহমেদ (২০)। এ ছাড়া হবিগঞ্জের উমেদনগর, আজমিরীগঞ্জের পশ্চিমভাগ, জলসুখা ও বানিয়াচং উপজেলার তারাসই গ্রামের আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
নিখোঁজ আলফাজ মিয়া রনির বড় ভাই মনির মিয়া বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার ত্রিপলি থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে চারটি নৌকা ছেড়ে যায়। এর মধ্যে একটি নৌকায় হবিগঞ্জের ৩৮ জনসহ প্রায় ৭০ জন ছিলেন, সেই নৌকাটিই নিখোঁজ হয়েছে। বাকি তিনটি নৌকা ইতালিতে পৌঁছেছে।
তিনি আরও জানান, আজমিরীগঞ্জের পশ্চিমভাগ গ্রামের লিবিয়া প্রবাসী হাসান আশরাফের মাধ্যমে ওই ৩৮ জন ১৭ থেকে ২০ লাখ টাকা করে দিয়ে ইতালি যাওয়ার উদ্যোগ নেন।
রনি ও মোজাক্কিরের স্বজনদের ভাষ্য, হাসান আশরাফ তাদের দুজনের কাছ থেকে মোট ৩৬ লাখ টাকা নিয়ে লিবিয়ায় পাঠিয়েছিলেন। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর নৌকায় তুলে দিয়ে বিষয়টি বাড়িতে জানানোর পর থেকেই তাদের আর কোনো খোঁজ মিলছে না। আশরাফের মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ।
একই ব্যক্তির মাধ্যমে ইতালি যাওয়া বানিয়াচং উপজেলার জাতুকর্ণপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে আবুল কাশেম খোয়াইক বলেন, আমি ধারকর্জ করে ১৭ লাখ টাকা তাকে দিয়েছি। অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে সে আমাকে ইতালি পাঠিয়েছে। আগে জানলে এ পথে কখনো আসতাম না।
বানিয়াচং উপজেলা সদরের আরেক বাসিন্দা জানান, তার পরিবারের ছয় সদস্য আশরাফের মাধ্যমে ১৮ লাখ টাকা করে দিয়ে ইতালি গেছেন। তবে তার আরও দুই আত্মীয় আশরাফের কাছে আটকা থাকায় পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
ফ্রান্স প্রবাসী সৈকত আহমেদ বলেন, হাসান আশরাফ গত ছয় মাসে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশিকে অবৈধভাবে ১৭/১৮ লাখ টাকা করে নিয়ে ইতালি পাঠিয়েছেন। তার দাবি, আশরাফ এখন বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
ইতালি প্রবাসী আবুল খায়ের বলেন, শুনেছি নৌকাটিতে মাফিয়া চক্র গুলি চালায়। এ ঘটনায় কয়েকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় লিবিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।