বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মাদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন,এক শ্রেণির আত্ম কেন্দ্রীক ও মূল্যবোধহীন রাজনীতিকের কারণে আমাদের রাজনীতি গণমুখী চরিত্র হারিয়েছে। তারা জনগণের কাছে ভোট নিয়ে নিজেরাই দেশের মালিক-মোক্তার হয়ে যান। তাই রাজনীতির এই অশুভ বৃত্ত থেকে আমাদেরকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি নেতিবাচক রাজনীতির পরিবর্তে দেশে ইতিবাচক রাজনীতি সূচনা করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।তিনি আজ সকাল ৯টায় রাজধানীর মগবাজারের রমনা মডেল স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে হাতিরঝিল পশ্চিম থানা জামায়াত আয়োজিত সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে সেলাই মেশিন ও শীতবস্ত্র উপহার বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য ও থানা আমীর ইউসুফ আলী মোল্লার সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি রাশেদুল ইসলাম রাশেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, হাতিরঝিল অঞ্চল পরিচালক হেমায়াতে হোসাইন এবং মহানগরীর প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক, সহকারি অঞ্চল পরিচালক মু. আতাউর রহমান সরকার। উপস্থিত ছিলে থানা নায়েবে আমীর নূরুল ইসলাম আকন্দ, জামায়াত নেতা মাওলানা গোলাম মাওলা, শামীম হোসাইন ও পেশাজীবী নেতা আব্দুল কুদ্দুস প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন,আমাদের দেশের রাজনীতিতে অবক্ষয় এখন প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে প্রচলিত রাজনীতি চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, দুর্নীতিবাজ, লুটেরাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই রাজনীতি থেকে এদেরকে প্রতিহত করতে না পারলে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। জামায়াত একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল হিসাবে গণমানুষের কল্যাণে নিরলসভভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় আমরা অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান সহ অনেক জনহিতকর প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছি। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে কোন চুরি বা অনিয়মের অভিযোগ নেই বরং আমরা নিজেদের অর্জিত পকেটের টাকা খরচ করেই আর্ত- মানবতার সেবাই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দলে দলীয় পদ নিয়ে কোন মারামারি বা হট্টগোল হয় না বরং আমাদের সকল কর্মতৎপরতা দেশ ও জাতির জন্য নিবেদিত।
তিনি বলেন, আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, দুনিয়া আমাদের আসল ঠিকানা নয় বরং আখেরাতই আমাদের প্রকৃত গন্তব্য। দুনিয়ার ভালো-মন্দ কাজের ওপর আখেরাতে আমাদের জন্য পুরুষ্কার বা তিরস্কার হিসাবে জান্নাত- জাহান্নাম নির্ধারিত হবে। আর মানবজাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যুগে যুগে নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন। তিনি দেশে দুর্নীত, অনিয়ম ও লাগামহীন চাঁদাবাজীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, যারা দেশে রাজনীতির নামে চাঁদাবাজীতে ব্যস্ত তাদের রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার সময় এসেছে। কারণ, চাঁদাবাজীর চেয়ে ভিক্ষাবৃত্তিই উত্তম।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের ভয়ের কোন কারণ নেই বরং দেশের ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের সাথে আছেন। তাই কারো মুখের দিকে না তাকিয়ে নির্ভয়ে চাঁদাবাজী সহ দেশের সকল প্রকার অপরাধ প্রবণতা কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। আমরা আসন্ন রমজানে বেশি দামে পণ্য কিনতে চাই না।
তিনি বাজার নিয়ন্ত্রণে চাঁদাবাজদের প্রতি শূণ্য সহনশীলতা প্রদর্শনের জন্য অন্তবর্তিকালীন সরকারের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় সরকারের সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।