পাকিস্তানের দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল এখনও ঝুলে। সব ক’টি কেন্দ্রের ভোটগণনা এখনও শেষ হয়নি। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, বেশ কিছু এলাকায় যান্ত্রিক গোলযোগ এবং ইন্টারনেট পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় গণনায় দেরি হচ্ছে। কোথাও কোথাও জঙ্গি হামলাও ভোটের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে।গণনার শেষ লগ্নে এসে অনেকেই মনে করছেন, ভোটের পিচে পাকিস্তানের দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ‘সুপার ওভার’-এ পৌঁছে গিয়েছেন। এখন কী হবে, কেউ জানে না। নানা রকম সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে। পাক সংবাদমাধ্যম ‘ডন’-এর তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা ৯৩টি, আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ৭৩টি এবং বিলাবল ভুট্টোর দল পিপিপি ৫৪টি আসনে জিতেছে। অন্যান্যরা পেয়েছে ৩৩টি আসন।অন্য একটি সূত্র বলছে, পিটিআই সমর্থিত নির্দলরা ১০২টি আসনে জয়ের মুখ দেখে ফেলেছেন। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গড়ার জন্য চাই আরও ৩১টি আসন। যা সম্ভব নয়। কারণ আর গুটিকয়েক আসনে গণনা বাকি আছে।
ইমরান এবং নওয়াজ, দু’জনেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গড়ার দাবি জানিয়েছেন। তবে নির্বাচন কমিশন এখনও পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করেনি। মনে করা হচ্ছে, এখনও ৮ থেকে ১০টি কেন্দ্রে ভোটগণনা বাকি। ইতিমধ্যে অনেক কেন্দ্র থেকে প্রার্থীরা গণনায় কারচুপির অভিযোগ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ৪০টি কেন্দ্রে ইতিমধ্যে পুনর্নিবাচনের নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পুনর্নিবাচন দিন স্থির হয়েছে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, পাকিস্তানের রাজনীতিতে আগামী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই সময়ের মধ্যেই হতে পারে রাজনৈতিক দলগুলির ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র খেলা। যা তুরুপের তাস হয়ে উঠবে পূর্ণাঙ্গ ফলাফলে। সরকার কে গড়বে, তা-ও নিশ্চিত হয়ে যাবে এই পর্বেই। ইমরান সমর্থিত নির্দলরা প্রাথমিক ভাবে বেশি আসন পেলেও ‘সুপার ওভারে’ খেলা অন্য দিকে ঘুরে যেতে পারে।মরানের দলকে রুখতে নওয়াজের সঙ্গে বিলাবল ভুট্টোর পিপিপি হাত মেলাতে চলেছে বলে আগেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। পিপিপি সিন্ধ প্রদেশে শক্তিশালী। সেখান থেকেই মূলত ভোট পেয়েছেন তিনি। তাঁদের জোট হলে পাকিস্তানে জোট সরকার গঠন করবে নওয়াজের পিএমএল-এন। দেশের সেনাবাহিনীর সমর্থনও রয়েছে তাঁর পক্ষে।দুর্নীতির দায়ে জেল খাটছেন ইমরান। তাঁর দলের প্রতীকে এ বার কেউ ভোটেও দাঁড়াতে পারেননি। পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা তাই পাকিস্তানে নির্দল হিসাবে লড়ছেন।