ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪,
সময়: ০৯:০২:১৭ AM

বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভারতের :রিজভী

স্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
07-12-2024 06:55:49 PM
বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ভারতের :রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, মিথ্যার বেড়াজাল নির্মাণ করে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে ভারত। কিন্তু প্রযুক্তির এই যুগে তারা সফল হতে পারছে না। আজ শনিবার সকালে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উদ্যোগে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে আহতদের খোঁজখবর নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আহতদের প্রতি সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন রুহুল কবীর রিজভী।এরপর উপস্থিত সাংবাদিকদের রিজভী বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের জন্য মায়াকান্না করছে ভারত। বাংলাদেশে নাকি হিন্দুদের বাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, বাংলাদেশে নাকি হিন্দুদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে! এ ধরনের ডাহা অসত্য-মিথ্যার বেড়াজাল নির্মাণ করে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন তারা। কিন্তু প্রযুক্তির এই যুগে তারা সফল হতে পারছেন না।’তিনি বলেন, ‘তাই এখন হিংসা-প্রতিহিংসার জ্বালায় প্রতিদিন অপপ্রচারের যে কথাগুলো আমরা জানতে পারছি, তাতে মনে হচ্ছে যে, ভারতকে আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে জানতাম, যে ভারতে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষিত হয় বলে আমরা জানতাম, যে ভারতে অনেক জ্ঞানী-গুণী মানুষের দেশ, সেই দেশটিকে এখন মনে হচ্ছে, সেখানে হিংস্র ঘাতক এবং প্রচণ্ড রক্তপিপাসু মানুষরা বাস করে।তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে দিয়ে তারা (ভারত) নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে। সেই স্বার্থ রক্ষার জন্যই তারা শেখ হাসিনার জন্য যে কুমিরের মায়াকান্না করছেন, এটাই এখন সত্য প্রমাণিত হচ্ছে।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ওরা (ভারত) এতদূর গেছে যে, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার যে পতাকা—সেই পতাকা ছিঁড়ে ফেলেছে। কূটনৈতিক নেতৃবৃন্দের গায়ে হাত তুলেছে, ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী এটা ভয়ংকর রকমের আন্তর্জাতিক গুরুতর অপরাধ, সেই অপরাধ তারা করেছে।তারা একবারও ভাবেনি শেখ হাসিনা এই দেশে কী নিষ্ঠুরতা, কী নির্দয়তা, কী হিংসাশ্রয়ী আচরণ করেছে।’
রুহুল কবীর রিজভী আরো বলেন, ‘আজকে বার্ন ইউনিটে যে দৃশ্য দেখলাম, এই দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না। গণ-আন্দোলনের সময় আমি কারাগারে ছিলাম। বের হয়ে অনেক হাসপাতালে গেছি, কিন্তু এত বর্বরতা, এত মর্মান্তিক বুকফাটা কান্না বেরিয়ে আসে এই দৃশ্য দেখলে, কারো মুখ ঢাকা, মুখ খুললেই মনে হয় এ যেন কোনো হরর ছবির দৃশ্য দেখছি। কে নেবে তাদের দায়িত্ব? কী করে তারা বাঁচবে? এই পরিস্থিতি তৈরি করে গেছে পলাতক স্বৈরাচার।আর তাদের জন্য মায়াকান্না?’
রিজভী বলেন, ‘শুধু শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য ভারতের দিল্লি থেকে শুরু করে একেবারে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত কান্নার রোল পড়ে গেছে। এভাবে চলতে পারে না। বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র, সার্বভৌম রাষ্ট্র। রক্তের দামে কেনা বাংলাদেশ, এই বাংলাদেশকে কেউ মাথা নত করাতে পারবে না। এই বাংলাদেশকে ভয় দেখিয়ে, চোখ রাঙিয়ে নতজানু করানো যাবে না। এই বাংলাদেশে অপরাধীদের বিচার হবে, যারা আমাদের ভাইদেরকে পঙ্গু করেছে, যারা অপরাধ করেছে— মন্ত্রী থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের অপরাধীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্যসচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, শাকিল আহমেদ, ফরহাদ আলী সজীব, রুবেল আমিন, শাহাদত হোসেন প্রমুখ।

আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাবিবুল বাশার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসনাইন নাহিয়ান সজীব, ছাত্রদল নেতা ডা. আওয়াল, নাহিয়ান হোসেন, শারিফুল ইসলাম, মোহান, সেতু, মিসবাহ, জাকির, মাসুদসহ জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরা।