ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫,
সময়: ০৫:৪৬:১২ PM

শেখ হাসিনার বাজেট আর এই বাজেটের পার্থক্য নেই:রিজভী

স্টাফ রিপোটার।। দৈনিক সমবাংলা
03-06-2025 09:37:22 PM
শেখ হাসিনার বাজেট আর এই বাজেটের পার্থক্য নেই:রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনারা (সরকার) ৭ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। শেখ হাসিনার সাথে আপনাদের বাজেটের পার্থক্য কী বলুন? শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল আপনারাও দিয়েছেন।মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী তাঁতি দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।রিজভী বলেন, 'আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো চলুক। দেশে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। নির্বাচনটা কবে হবে, আর কত দেরি হবে জিজ্ঞেস করলে উপদেষ্টা চুপ করে থাকে। একটা সময়ে সংস্কারকে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী করেছে, সংস্কারকে সামনে নিয়ে এসেছে অথচ এখন তাও বলছে না।’অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের দেয়া বাজেট সম্পর্কে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, 'আপনারা (সরকার) ৭ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে দিয়েছেন। শেখ হাসিনার সাথে আপনাদের বাজেটের পার্থক্য কী বলুন? শেখ হাসিনাও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল আপনারাও দিয়েছেন। এটাতো অন্তর্র্বতীকালীন সরকার। ডক্টর ইউনূসের সরকার। এই সরকারের হাত দিয়ে কেন খারাপ কাজ হবে এটা মানুষ জানতে চায়। 

৭ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটের ২৩ শতাংশের উপরে যাবে শুধুমাত্র প্রশাসনের বেতনের জন্য। আর সুদের টাকা যাবে ১৪ শতাংশ। তাহলে গরিব মানুষের জন্য কী রেখেছেন? লাভের গুড় তো পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে তাহলে জনগণের জন্য কী করলেন? ’

রিজভী বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম। কিন্তু আমাদের তো বেশি দরকার স্বাস্থ্য খাত ও শিক্ষা খাতে। সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা তো সরকারই দেখবে। ডক্টর ইউনূস ক্ষমতায় আসার আগে অনেক কথা বলেছে। এখনতো তিনি নিজেই ক্ষমতায়। তিনি তো গরিব মানুষকে দেখবেন। এখন দেখছি উনার হাত দিয়ে লুটেরা, ব্যাংক ডাকাতরা যাদের হাতে কালো টাকা, তারা তাদের টাকা সাদা করার সুযোগ পাচ্ছে। দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ডক্টর ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছে যে আপনি বেশ ভালো চালান। অথচ তার হাত দিয়ে যে বাজেট সে বাজেট গরিবকে আরো গরীব করা এবং মুদ্রাস্ফীতি কমানোর টা তো দেখতে পাচ্ছি না। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের চাপ আরো বাড়বে।’ 

বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে শুধু নেতা বললে হবে না, তিনি একটা যুগ সৃষ্টি করা নেতা। জনগণ তাকে নাম দিয়েছে রাখাল রাজা। তিনি মাইলের পর মাইল হেঁটে জনগণের দুর্দশা উপলব্ধি করেছেন। তিনি অনেক ভালো ভালো কর্মসূচি করেছেন। জিয়াউর রহমান জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এমন সময় ক্ষমতায় এসেছেন যখন একদিকে রাজনৈতিক সংকট এবং অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকট। ৭৪ এর দুর্ভিক্ষের সময় ক্ষুদা-দারিদ্রতায় মানুষ এক মুঠো ভাত পাচ্ছে না। এসমস্ত বিপর্যস্তকর পরিস্থিতির পরে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি এগুলো রক্ষার মাধ্যমে কী করে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, একারণে তিনি সারাদেশে খাল খনন করেছেন। খাদ্য উৎপাদনের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অল্প সুদে তিনি ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে গোটা জাতিকে তিনি একটা শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েছেন।’   

রিজভী আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মানুষের কাছে একজন অনুকরণীয় নেতৃত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাকে দেশ বিদেশের আন্তর্জাতিক শক্তি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে পছন্দ করে না, সেজন্য তাকে (জিয়াউর রহমান) আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে হত্যা করা হলো। তিনি কেন নিজ দেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন, দেশকে কেন স্বাবলম্বী করছেন, কেন দেশকে গণতন্ত্র দিচ্ছেন।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের নমুনা শেখ হাসিনার আমলে দেখেছি, তার বাপের আমলেও তা-ই ছিল। সে আইন করেছে, কালাকানুন অনেক করেছে৷ কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। যারা কিছুটা মত প্রকাশ করেছেন, তাদের ঠিকানা হয়েছে কারাগারে। এই আমলের ব্যতিক্রম ছিল বিএনপির আমল। বিএনপির আমলে যে কোনো মানুষ নির্বিঘ্নে মত প্রকাশ করতে পারতো। গণতন্ত্রের নিশ্চয়তার দল হচ্ছে বিএনপি।’

তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।