দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২টি পরিবার।শুক্রবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় এখন পর্যন্ত ১১ জেয়ায় ৫৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রায় ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সার্বিকভাবে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ফলে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলো হলো- ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার।মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের বন্যায় ৪টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন/পৌরসভা ৪৮৬টি। ১১ জেলায় মোট ১০ লাখ ৯ হাজার ৫২২টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে; ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার ১৬৭ জন।মন্ত্রণালয় আরও জানায়, চলমান বন্যায় মারা গেছে এখন পর্যন্ত ৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ-৪১, নারী-৬ ও শিশু ৭। জেলাভিত্তিক মারা গেছেন কুমিল্লা-১৪, ফেনী- ১৯, চট্টগ্রাম-৬, খাগড়াছড়ি-১, নোয়াখালী-৮, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১, লক্ষ্মীপুর-১ ও কক্সবাজার ৩ জন ও মৌলভীবাজার ১ জন। এখনো মৌলভীবাজারে নিখোঁজ রয়েছের একজন।
জানা গেছে, চলমান বন্যায় পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মোট ৩ হাজার ২৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮৭ জন আশ্রয় নিয়েছেন। ৩৮ হাজার ১৯২টি গবাদি পশু আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা দানের জন্য মোট ৫৬৭টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক বন্যাদুর্গত এলাকায় এক লাখ ৯৪ হাজার ২৮৫ প্যাকেট ত্রাণ, ১৯ হাজার ২৬০ প্যাকেট রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। মোট ৪২ হাজার ৭৬৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১৮ হাজার ৩৮৯ জনকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ১৫৩ জনকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত মোট ২৪ টি ক্যাম্প এবং ১৮টি মেডিকেল টিম বন্যা উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন।