নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে যে স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে তার নিচে আমরা আর নামতে দিতে চাই না। বরং আরও ওপরে উঠতে চাই। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে রাজশাহী নগরীর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪ উপলক্ষে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের জাতীয় ইলেকশন একটা পর্যায়ে চলে গেছে। মানে ভোটারের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা যে ক্ষেত্রটা সেটা চলে গেছে। আমরা চাই আমাদের জাতীয় ইলেকশনে যে একটা পর্যায়ে তৈরি হয়েছে, একটা স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে; আমরা সেটা থেকে কোনো ক্রমেই নিচে নামতে চাই না। সেটা থেকে আরও ওপরে উঠে যেতে চাই। ’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মেসেজ একটাই—একটা অবাধ, সুন্দর, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন। যে নির্বাচনে ভোটাররা আসবেন এবং তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিতভাবে প্রয়োগ করবেন। বাইরে গিয়ে যাতে তারা বলতে পারেন যে, আমার ভোটটা আমি দিয়েছি। এ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাটাই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। সেই পরিবেশ তৈরি করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।’৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘অত্যন্ত সুসংগত, সহিংসতামুক্ত এবং সুন্দর একটি নির্বাচন হয়েছে। সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন। যিনি কেন্দ্রে যাননি তার কথাটি আলাদা। না গেলে তিনি কীভাবে ভোট দেবেন? ভোটকেন্দ্রে যে সময় হোক মানুষ গেছে এবং ভোট দিতে পেরেছে। এটাই কিন্তু গণতন্ত্রের মূলধারা, মূলচর্চা।’
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘জামানতের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। অনেকেরই প্রশ্ন এটা কেন বাড়ানো হলো। এটা ২০-৩০ বছর আগের। ২০-৩০ বছর আগে যেটা প্রচলন ছিল সেটা এখনো থাকবে, এটা বাস্তবসম্মত না। আমরা এই বাস্তবতা মেনে জামানত বাড়িয়েছি। আমরা আরেকটি বিষয় সংশোধন করেছি। আগে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর আড়াইশ ভোটারের সই লাগতো। আমরা এটা সংশোধন করেছি। কারণ এটা সাংবিধানভাবে সাংঘর্ষিক। একটা ভোটার আগে থেকেই একজনের পক্ষে হয়ে যাবে, মানুষ জেনে যাবে তিনি তার পক্ষের লোক। এতে ভোটারের গোপনীয়তা থাকে না। তাই আমরা এটা তুলে ফেলেছি। পর্যায়ক্রমে সব নির্বাচনে বিধি-বিধানগুলো তুলে ফেলবো।’
ইভিএমের ব্যবহার প্রসঙ্গে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ইভিএমে সব নির্বাচন করতে পারলে আমরা খুশি হতাম। তবে আমাদের ইভিএমের এতো সক্ষমতা নেই। এখন ভালো যে ইভিএমগুলো আছে সেগুলো ইলেকশনে কাজে লাগাতে চেয়েছি। সেক্ষেত্রে প্রতি বিভাগে দুটি করে ইভিএমে ইলেকশন পাচ্ছি। সিরাজগঞ্জ, পাবনায় ইভিএমে নির্বাচন করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেখানে ইভিএমে নির্বাচন হবে সেখানে সব পর্যায়ে ইভিএম হবে। আর যেগুলো ব্যালটে হবে সেখানে সব পর্যায়ে ব্যালটে হবে। আমরা এটাকে মিক্স করে দিতে চাইনি। এতে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।’রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা কার্যালয়ের আয়োজনে সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ