যুক্তরাষ্ট্রে ঘরে ঢুকে বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার বিষয়ে জবাব চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনরতদের ওপর হামলার ঘটনাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে দাবি করে সেটিরও জবাব চেয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ঘরে ঢুকে আমাদের বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। মানবাধিকার সংস্থা এবং যারা আমাদের স্যাংশনস দেয়, তারা এর কী জবাব দেবে? আমি এর জবাব চাই।মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের চেহারা আয়নায় না দেখে, মানবাধিকার নিয়ে সবক দেয় বাংলাদেশকে। ফিলিস্তিনে যুদ্ধের বিরোধিতা করায় সাধারণ মানুষের আন্দোলনে কি জুলুমটাই না করলো আমেরিকার পুলিশ। এটা তো মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর জবাব কী?শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে এরই মধ্যে ১৫০০ কোটি টাকা টোল উঠেছে। বাংলাদেশ যে পারে এটাই তার প্রমাণ। দেশে রাজনৈতিক দেউলিয়া যারা, তাদের কিছু বক্তব্য আর কিছু বুদ্ধিজীবী অনবরত গীবত গাচ্ছে। অতিবাম আর অতিডান মিলে সরকার উৎখাতের কাজ করছে। তাদের মূললক্ষ্য সরকার উৎখাত। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ব যখন প্রশংসা করছে তখন কিছু মানুষ সমালোচনা করছে। যে যাই বলুক, শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে সবসময় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই পথ চলতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশ ও মানুষের ওপর আস্থা রেখেই দেশ চালায়। কিছু রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী অনবরত দেশবিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের চোখে কিছুই ভালো লাগে না। বাংলাদেশ তো পেছাচ্ছে না, এগিয়ে যাচ্ছে। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় বসে লুটপাট করতে পারছে না বলেই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় নেমেছে বিএনপি। বিএনপি এমন একটি দল, যাদের কোনো মাথামুণ্ডু নেই। তারা শুধু পারে অনলাইনে নির্দেশনা দিতে। ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে অপকর্ম করেছে, তা মানুষের ভুলে যাওয়া উচিত না।ভোটচুরি করে ক্ষমতায় আসা দলের কাছে আজ গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তারা কেন বুঝতে পারছে না দেশবাসী নির্বাচনে ভোট দিতে পেরে খুশি। জনগণের আস্থা আওয়ামী লীগ পেয়েছে, কারণ মানুষ বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ তাদের উপকার করে।
জনগণের আস্থা-বিশ্বাসই আওয়ামী লীগের মূলশক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশের মানুষের দিন বদল হয়েছে। দারিদ্র্যের হার এখন গ্রামে নয় শহরে দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়া যাবে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এক বছর না পেরোতেই দেড় হাজার কোটি টাকা উপার্জন হয়েছে দেশের। এটাই তো প্রাপ্তি।
প্রচণ্ড গরমে দেশবাসীকে সাবধানে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় গরম ছড়িয়ে পড়েছে। শিগগির বৃষ্টি হবে বলে আশা করছি। আষাঢ়ের প্রথম থেকে পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ চালিয়ে যেতে হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।সন্ধ্যা ৭টার পর গণভবনে বসেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা। সভায় সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের অন্যান্য সদস্যরা এতে অংশ নিয়েছেন।জানা যায়, বৈঠক থেকে দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে সারাদেশে এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া ও প্রভাব বিস্তারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। এছাড়া দল সুসংগঠিত করার বিষয়েও নির্দেশনা আসবে।