
ন্যায়, ইনসাফভিত্তিক বৈষম্যহীন সমাজ গঠন এবং দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য মানব রচিত বিধানের বিপরীতে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা, মানুষকে ভালো কাজ করার উৎসাহ প্রদান এবং মন্দ কাজকে নিরুৎসাহিত করতে যুব সমাজের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি গত রাতে স্থানীয় সমাজ কল্যাণ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের যুব বিভাগ আয়োজিত ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের যুবকদের নিয়ে এক যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে ও যুব বিভাগের পরিচালক আতিক রায়হানের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের সদস্য সচিব শাহ আলম তুহিন এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও কাফরুল দক্ষিণ থানা আমীর অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম। আরো উপস্থিত ছিলেন কামরুল উত্তর থানা আমীর রেজাউল করিম, ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী খান হাবিব মোস্তফা ও আব্দুল্লাহ আল আমান প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো সেক্যুলারিজম তথা নাস্তিক্যবাদ। তারা ইসলামকে মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা ও মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়। অথচ তারা ব্যবসা-বাণিজ্যে ইসলামকে অনুসরণ করতে চায় না। পণ্য মজুদ করে কৃত্রিমভাবে মূল্যবৃদ্ধিকে ইসলামে হারাম করা হয়েছে। পণ্যে ভেজাল ও ওজনে কম দেওয়াকে ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। তাই তারা ব্যবসা-বাণিজ্যে ইসলামকে অনুসরণ করতে চায় না। তিনি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামী আদর্শের অনুসরণের কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকারি কর্মচারিদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে। কিন্তু ঘুষ ছাড়া জন্ম নিবন্ধনের মত অতিক্ষুদ্র সেবাও পাওয়া যায় না। আমাদের দেশের অর্থব্যবস্থাও সুদ ভিত্তিক। আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থাও ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে চলে না। অথচ পবিত্র কালামে হাকীমে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, যারা আল্লাহর দেওয়া বিধান অনুযায়ি বিচার-ফয়সালা করে না, তারা কাফের, ফাসেক ও জালেম। তাই আর্ত-মানবতার মুক্তির জন্য সকলকে ইসলামের ছায়াতলেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, মানুষের তৈরি করা বিধান দিয়ে মানুষের কল্যাণ বা মুক্তি কোন ভাবেই সম্ভব নয়। তাই মানুষের মুক্তির জন্য আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। আর এ মহতি কাজের আঞ্জাম দিতে গেলে ইসলামী আদর্শে আদর্শবাদী ব্যক্তিদের হাতে নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব থাকতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি সূরা হজ্জের ৪১ নং আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব এমন লোকদের হাতে থাকা উচিত যারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। জামায়াতে ইসলামী এমনই একটি ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি সে স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধ সমাজকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, দেশ ও জাতির জন্য আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আসন্ন নির্বাচনে আমাদেরকে সৎ, যোগ্য, প্রজ্ঞাবান, আল্লাহভীরু লোকদের নির্বাচিত করে নেতৃত্বের আসনে বসাতে হবে। তিনি ঢাকা-১৫ আসনে আমীরে জামায়াতের প্রার্থীতার কথা উল্লেখ করে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা চরম সৌভাগ্যবান যে, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের মত হেভিওয়েট প্রার্থী পেয়েছেন। তিনি শুধু দেশে নন বরং আন্তর্জাতিকভাবেও সম্মানিত ও সমাদৃত ব্যক্তি। যদি গণমানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য ইতোমধ্যেই মানবতার ফেরিওয়ালা খেতাব লাভ করেছেন। যার যোগ্য ও গতিশীল নেতৃত্বে আগামীতে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ন্যায়- ইনসাফের নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। তিনি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে অত্র সংসদীয় আসনকে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত করার আহবান জানান।