বিএনপির এক দফা দাবিতে নয়াপল্টনের কাদাপানিতে আটকে গেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, লাফালাফিতে কাজ হবে না।শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ আয়োজিত যৌথ শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শোনেন, যত লাফালাফি, যত তাফালিং করেন, ফখরুল সাহেব, তারেক জিয়া, এই লাফালাফিতে কাজ হবে না। যতই তাফালিং করেন ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন বহু দূরে চলে গেছে। ওইটা খুঁজে পাবেন না। লাফালাফি করবেন না।
তিনি বলেন, রাজনীতির খেলায়, আন্দোলনে আওয়ামী লীগকে কেউ হারাতে পারে না। রাজনীতির খেলায় আওয়ামী লীগ চ্যাম্পিয়ন। আন্দোলন করে হারানো যাবে না। তাহলে নির্বাচন! নির্বাচনে তো আপনারা আসবেন না। বিএনপি নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা ঢাকার রাস্তা বন্ধ করতে আসবে তাদের চলার পথ বন্ধ করে দেবো। দেশি-বিদেশি কেউ চোখ রাঙাবেন না। আমাদের শেকড় এ মাটির গভীরে। আমরা কাউকে পরোয়া করি না। আগুন নিয়ে আসবেন হাত পুড়িয়ে দেবো, ভাংচুর করতে আসবেন হাত পুড়িয়ে দেবো।আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা হতাশ হবেন না। কারো চোখ রাঙানি শেখ হাসিনা পরোয়া করেন না। তিনি প্রয়োজনে জীবন দেবেন, তারপরও বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ব্যাহত হতে দেবেন না।নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, মাথা গরম করবেন না। শৃঙ্খলা রাখবেন। আওয়ামী লীগের মঞ্চে শৃঙ্খলা থাকবে, সবাই উঠবে কেন? আমরা ক্ষমতায়, আমরা কেন গন্ডগোল করতে যাবো। যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে এসেছেন, সেভাবেই ফিরে যাবেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কারা কারা লন্ডনে যাচ্ছেন, তারেক রহমানের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছেন- নমিনেশনের জন্য, ভবিষ্যতে ব্যবসার জন্য টাকা লেনদেন করছেন তারেক রহমানের সঙ্গে। আমরা খবর রাখছি। সে-ই তো আসতে পারবেন না। আপনাদের নমিনেশন দেবে কীভাবে?রাজনীতিতে খেলা হবে ঘোষণা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। ভুয়া তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ভুয়া এক দফার বিরুদ্ধে খেলা হবে। বিএনপির এক দফা, নয়াপল্টনের কাদা-পানিতে আটকে গেছে।
তিনি বলেন, তারেক জিয়া লন্ডন থেকে ফরমায়েশ দিচ্ছেন। এখানে মির্জা ফখরুল, আমীর খসরুরা লাফালাফি করছেন। আমীর খসরু বলেছেন গণভবন নাকি ছেড়ে দিতে হবে। গণভবন কি তোমার বাবার? যতদিন জনগণ চাইবে, শেখ হাসিনা ততদিন গণভবনে থাকবেন। তোমার তারেক জিয়া কিছুই করতে পারবে না। ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন পেয়ে গেছো? এটা বহুদূর। সেটার নাগাল আপনারা পাবেন না।
মুচলেকা দেওয়া তারেক রহমান হলেন মির্জা ফখরুলের নেতা। এই নেতা কেউ মানে? তারেক রহমানকে ধরবে বাংলাদেশের মানুষ। লন্ডন থেকে যতই আস্ফালন করছে, ততই মানুষ তার ওপর ক্ষেপছে। তারেক, ফখরুল, খসরুরা আইন মানেন না। তারেক কথায় কথায় সুপ্রিম কোর্টকে হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেন। আমরা তার বিচার চাই। এত অহংকার ভালো নয়।এর আগে বিকেল সোয়া তিনটায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ শুরু হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়।
এতে সভাপতিত্বে করছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু যৌথভাবে সঞ্চালনা করছেন।সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
শান্তি সমাবেশ উপলক্ষে দুপুর থেকে রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন ইউনিট এবং দেশের বিভিন্ন জেলা শাখা থেকে তিন সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। দুই দফা বৃষ্টিতে সমাবেশে উপস্থিতি কিছুটা বেকায়দায় পড়ে। কেউ কেউ আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নেন।