বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে এমনভাবে নতুন নেতৃত্ব গড়ে উঠবে এবং পরিচালিত হবে যাতে সমাজের স্লোগান “নতুন নেতৃত্ব, নতুন বাংলাদেশ” আপনারাদের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। আপনাদের নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের নতুন মানচিত্র পাওয়া সম্ভব হবে।শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচিত প্রতিনিধি সংবর্ধনা—২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।জামায়াত আমীর বলেন, অতীতের কলুষিত ছাত্ররাজনীতিতে দেখা গিয়েছিল—ছাত্রসংসদে নির্বাচিত যারা হতো, তারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অংশ না নিয়ে অসৎ উপায়ে রুজি করতো। তাই তিনি চান, বর্তমান ছাত্রসংসদগুলোতে সততার পরীক্ষা শতভাগ উত্তীর্ণ দেখতে পাওয়া যাক। এখানে এক ভাগও ফেল তিনি এই জাতি দেখতে চায় না।

ডা. শফিকুর রহমান সকল দলের যারা ছাত্রসংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের কাছে জাতির অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। তোমাদের দায়িত্ব কেবল ক্যাম্পাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—জাতির স্বপ্নসারথী হিসেবে এ স্বপ্ন ধারণ করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবীদের প্রতি জাতির ঋণ রয়েছে; আশা করি তোমরা সেই দেনা পরিশোধ করবে। তিনি বিশ্বাস ব্যক্ত করে বলেন, এই ভারী—পর্বতসমান দায়িত্ব তোমরা অতিক্রম করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে গড়বে—তার রিহার্সেল হচ্ছে ছাত্রসংসদের মাধ্যমে। তাই তরুণসম্বলিত (তরুণনির্ভর) বাংলাদেশ দেখতে চান তিনি। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে Academic Centre of Excellence হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ছাত্রসংসদকে প্রধান অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ক্রমেই কমে যাচ্ছে—ছাত্রসংসদকে এ নিয়ে কাজ করতে হবে এবং শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। যুবসমাজ নিয়ে জাতির যে আশা তৈরি হয়েছিল, কিছু ভুলের কারণে সেখানে টেভ যে ক্ষতি দেখা দিয়েছে—ছাত্রসংসদ যেন তা পূরণ করে।

ছাত্রসংসদ নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে ভবিষ্যতের বৃহৎ নেতৃত্বের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। তোমাদের হাতে একদিন নেতৃত্ব তুলে দিতে চাই—দেশের ককপিটে তোমাদের বসাতে চাই। তুমি ককপিটে বসে দেশ পরিচালনা করবে; আমরা পেছন থেকে তোমাদের জন্য দোয়া করবো, শক্তি যোগাবো। ভুল হলে কানে কানে সংশোধন করে বলা হবে; না মানলে হাতে ধরে শাসন করা হবে; তাও না মানলে সম্মানের সঙ্গে আসন থেকে জাতিকে সঙ্গে নিয়ে তোমাদের সরিয়ে দেওয়া হবে—রাগ না করে এমনভাবে তোমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

জামায়াত আমীর সবশেষে বলেন, তিনি গভীরভাবে বিশ্বাস করেন যে তোমরা পারবে—তোমরা পারেছ ও। একটি অনিষ্টকর হস্তিকে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দিতে তোমরা সফল হয়েছো। তোমাদের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।