জনগণ, গোটা বিশ্ব বুঝে গেছে এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো দিনই কোনো সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন হবে না, এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের নতুন কমিটির উদ্যোগে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।এবার জনগণ জেগে উঠেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি জনগণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেরকে (সরকার) পরাজিত করবে এবং সত্যিকার অর্থে একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করবে।’
গাজীপুরসহ পাঁচ সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে অংশগ্রহন করবে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শনিবার শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পনের পর বিএনপি মহাসচিব দলের এই অবস্থানের কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা খুব পরিস্কার করে বলে দিয়েছি যে, কোনো রকমের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা যাচ্ছি না।”
‘‘ বিশেষ করে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা পরিস্কার বলে দিয়েছি যে, এখানে মেয়র নির্বাচনই বলেন বা কমিশনার নির্বাচনই বলেন এখানে আমাদের দলের কোনো অংশ গ্রহন থাকবে না।”
‘নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিশ্বাস করে না, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, আওয়ামী লীগ বিশেষ করে এই সরকার তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে গণতন্ত্রকে ধবংস করে তাদের যে পুরনো লক্ষ্য সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশালের ন্যায় একটা শাসন ব্যবস্থা এখানে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেই লক্ষ্যে তারা ২০১৪ সালেও নির্বাচনকে সম্পূর্ণভাবে একটা প্রহসনে পরিণত করেছে, নির্বাচনে জনগন ভোট দিতে যায়নি। একইভাবে ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগের রাতে ভোট করে নিয়ে জোর করে তারা ক্ষমতায় বসে আছে। জনগন সেখানেও অংশগ্রহন করেনি।”
‘‘ এমনকি আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে জনগন অংশ করছে না, ভোটররা কেন্দ্রে যাচ্ছে না। সম্প্রতি যে ভোট হয়ে গেলো(চট্টগ্রামে উপনির্বাচন) সেই ভোটে মাত্র মাত্র ১৪% মানুষ ভোট দিতে গেছে। সুতরাং জনগন বুঝে, মানুষ বুঝে, গোটা বিশ্ব বুঝে এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো দিনই কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, জনগন সেই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। সেই কারণেই আজকে আওয়ামী লীগ এই সমস্ত কথা বলে জনগনকে বিভ্রান্ত করতে চায়।”
তিনি বলেন, ‘‘ সরকার বিদেশে তাদের ভাবমূর্তি ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তারা সেই ভাবমূর্তি তৈরি করতে চায়।”
‘‘ কিন্তু এবার জনগন জেগে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগন দূর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেরকে পরাজিত করবে এবং সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।”
সকাল ১১টায় বিএনপি মহাসচিব জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটির সভাপতি এসএম জিলানি ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের নেতৃত্বে নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ এবং প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন।
এই সময়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলসহ নবগঠিত কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইয়াছিন আলী, সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ২০ এপ্রিল জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ২১৩ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয় বিএনপি।