দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেয়া এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।তিনি বলেন, ‘‘ বর্তমানের মূল রাজনৈতিক সংকট নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনো আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসু হবে না এবং তা হবে অর্থহীন।২০১৪ সাল এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রমাণিত হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয় এবং ইচ্ছা থাকলেও নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেই।”
‘‘ আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়েছে যে, যেহেতু মূল রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের কোনো সম্ভাবনা নির্বাচন কমিশন প্রস্তাবিত আলোচনা ও মতবিনিময় সম্ভব নয়। সেই কারণে বিএনপি এই প্রস্তাব গ্রহন করতে পারছে না।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আবদুল আউয়ালকে চিঠি দেয়ার জন্য স্থায়ী কমিটির সভায় ধন্যবাদ জানানো হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের চিঠি পর্যালোচনা করে ইসির সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গত ২৩ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশরার কাজী হাবিবুল আউয়াল ডিও পত্রের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নির্বাচন কমিশনে আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
গত বছরের শুরুতে হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফায় সংলাপ করে। তবে বিএনপি ও এর মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোগুলোসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল কোনো সংলাপে যায়নি।
সিইসির চিঠির জবাব আলাদা করে দেবে না’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমি এই প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমেই উনাকে(সিইসি) জানাচ্ছি, এজন্য এই প্রেস কনফারেন্স করা। আমি আশা করি আমাদের মতামতটা গ্রহন করবেন।”
‘‘ আপনাদের(গণমাধ্যমের) মাধ্যমে আমাদের উত্তরটা নির্বাচন কমিশন দিয়ে দিলাম। আমরা এই প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে আমাদের উত্তর জাতিকে জনগনকে জানিয়ে দিয়েছি। এটা নতুন করে আর কিছু নাই।”
‘এই নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাহীন’
সংলাপের সুযোগ কেনো নিচ্ছে না এরকম প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ যার কোনো ক্ষমতাই নেই আমার দেশের এই সমস্যা সমাধান করার তার(ইসি) কাছে এই সুযোগ(সংলাপ) কি জন্য নেবো? উনি তো মেইল বক্স নন যে, উনার কাছে পাঠিয়ে দিলাম, উনি পাঠিয়ে দিলেন সরকারের কাছে। এটা এবসেলুইটলি সরকারের ব্যাপার। যেহেতেু গভমেন্টের পার্লামেন্টে টু-থার্ড মেজরিটি আছে, গভমেন্ট ক্যান দিস, নো বডি এলস ক্যান টেক দিস..।”
‘‘ আমরা বার বার আন্দোলন করে এই কথাটা বলছি যে, এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এটা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে নাৃ। সংবিধান পরিবর্তন করেই ওই জায়গায় যেতে হবে। সুতরাং ওটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে, সরকারকেই আসতে হবে। আমাদের কথা খুব পরিস্কার যে, এই বিষয় ছাড়ার আর কোনো বিষয়ে আলোচনার আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।”
‘সিইসি অত্যন্ত ভদ্রলোক মানুষ’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার যিনি হয়েছেন তিনি কিন্তু ভদ্রলোক মানুষ, বিশিষ্ট ভদ্রলোক। চিঠির ভাষাও তার অত্যন্ত মার্জিত ভাষা এবং তার যে আবেদনটা, তার যে এ্যাপরোজ দেট ইজ অলসো ভেরি গুড এ্যাপরোজ। বাট উই নো দেট রিয়েলিটি। আমরা তো বাস্তবতাটা জানি।”
‘‘ উনার যে ক্ষমতাই নেই কোনো কিছু করার তার সঙ্গে আলাপ করে আমার কি হবে? আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি একথা নতুন না তো। উনি আবার চিঠি দিয়েছেন।”
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা যখন বলেছি কূটকৌশল। উনি গতকাল আপনাদের কাছে উত্তর দিয়ে বলেছেন, উনি এটা করছেন না, আন্তরিকভাবে করছেন। এটা বিশ্বাস করা আমাদের জন্য খুব কঠিন।”
‘‘ এজন্য যে, হোয়েন উই হেভ বিন সিং- ওয়াট হেপেনিং যে নির্বাচন কমিশন কি করছে, সরকার কি করছে, সরকারের যোগ সাজসে কি করা হচ্ছে? সো এটা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠতে পারে না।”